বরগুনায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জীবন পাল্টানো শিক্ষকরাই রয়েছেন অন্ধকারে! Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




বরগুনায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জীবন পাল্টানো শিক্ষকরাই রয়েছেন অন্ধকারে!

বরগুনায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জীবন পাল্টানো শিক্ষকরাই রয়েছেন অন্ধকারে!

বরগুনায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জীবন পাল্টানো শিক্ষকরাই রয়েছেন অন্ধকারে!




আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার হুমায়রা রোকেয়া আলোকিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষক কর্মচারী দীর্ঘ ৪ বছর ধরে এমপিওভুক্তির আশায় সরকারের সুদৃষ্টির প্রত্যাশায় প্রহর গুনছেন। এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষকরা দীর্ঘদিনে ধরে বিনাবেতনে পাঠদান করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নেই সরকারি কোনো সহযোগিতা। এ কিছুর পরেও খুবই আন্তরিকতার সাথেই পাঠদান ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন বিদ্যালয়টিতে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা।

 

 

জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধার নিজ উদ্যোগে তার নিজস্ব জমিতে আমতলী সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামে (আড়ুয়া বৈরাগীর ব্রিজের নিকট) ২০১৭ সালে হুমায়রা রোকেয়া আলোকিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১৯০ জন প্রতিবন্ধী শিশু লেখাপড়া করছেন। স্বেচ্ছাশ্রমে এসব প্রতিবন্ধীদের পাঠদান করাচ্ছেন কর্মরত বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা।

 

 

সরেজমিনে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আধাপাকা টিনসেটের একটি ভবনে আলাদা আলদা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকরা প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করছেন। বিদ্যালয়টিতে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশু ভর্তি হওয়ার পর থেকে বদলে যেতে শুরু করেছে তাদের জীবনমান। আগে যারা স্পষ্ট করে কথা বলতে পারত না, লিখতে পারত না, বাংলা ও ইংরেজি বর্ণমালা চিনত না, বুঝত না পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। ঠিক তারাই এখন স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে, লিখতে পারে, বর্ণমালা চেনে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও তারা এখন অনেক সচেতন। দিন দিন তাদের অনেক উন্নতি হচ্ছে। এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্তরিকতায়। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে রিকসা-ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন।

 

 

অভিভাবক মো. আব্বাস মিয়া বলেন, আমার প্রতিবন্ধী মেয়েটা আগে কিছু বুঝত না। এই স্কুলে পড়তে এসে এখন মানুষের সঙ্গে মেশে। কথা বলার চেষ্টা করে। বাবা-মা বলে ডাকে। ইশারার মাধ্যমে পায়খানা-প্রসাব করার কথা বোঝায়। দিন-দিন তার অনেক উন্নতি হচ্ছে।

 

 

সহকারী শিক্ষক বেলাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় থেকে কেউ কোনো প্রকার বেতন ভাতাদি পাচ্ছি না। ফলে অনেক কষ্ট করে আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের সংসার চালাতে হচ্ছে। অতিদ্রুত বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির আওতায় নেওয়ার জন্য আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

 

 

প্রধান শিক্ষক মো. নিয়াজ মোর্শেদ ইমন জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবন্ধীদের জীবনপট পাল্টে উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। তারা এখন অনেক কাজে পারদর্শী হয়ে উঠছে। প্রতিবন্ধী শিশু ও ব্যক্তিদের উন্নয়নে তাদের চাহিদা মতো সকল প্রকার শিক্ষা ও ব্যয়ামের উপকরণ রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। রয়েছে ফিজিওথেরাপিস্টসহ সংগীত ও বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকও। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী শিশু ও ব্যক্তিদের কারিগরি ও কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে।

 

 

সচেতন এলাকাবাসীর দাবি বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করা হলে যেমন সুযোগ-সুবিধা বাড়বে তেমনি উপকৃত হবে শিক্ষক-কর্মচারী এবং প্রতিবন্ধিদের পরিবারগুলোর।

 

 

বিদ্যালয়টির জমিদাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, আমার নিজস্ব ৩৩ শতাংশ জমির ওপর হুমায়রা রোকেয়া আলোকিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেমি পাকা টিনসেট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ১৯০ জন প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষার্থীরা অধ্যায়ন করছেন। এমতাবস্থায় দ্রুত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়টির এমপিওভুক্ত করতে হবে অন্যথায় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা অন্য পেশায় চলে যাবেন। ফলে আবারও অবহেলা ও অসহযোগিতায় পিছিয়ে যাবে অত্র এলাকার প্রতিবন্ধীরা।

 

 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এতকিছু করার পরেও বিদ্যালয়টিতে সরকারের কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাইনি।

 

 

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, সরেজমিনে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে এমপিওভুক্তির জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD