সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামে নির্মাণাধীন একটি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কাজ শেষ করার পূর্বেই দেবে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার সিডিউল মোতাবেক কাজ না করায় এ নির্মাণাধীন বাঁধটি দেবে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের ওপর দিয়ে তাফালবাড়িয়া নদী বয়ে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদীর প্রবল স্রোতে ওই গ্রামের মেম্বারের বাজারসংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১৩০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ওই ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়। ফলে ওই গ্রামের জমির ফসল ও চাষাবাদ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ। ওই ৫টি গ্রামের মানুষদের ভোগান্তি লাগবে ও নদীর ভাঙনরোধে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ইমার্জেন্সি প্রকল্পের অধীনে ওই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের নভেম্বর মাসে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজের কার্যদেশ পায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নির্মাণাধীন বাঁধের কাজের শুরুতেই ঠিকাদার অনিয়ম করে শিডিউল মোতাবেক কাজ না করায় নির্মাণকাজ শেষ করার পূর্বেই বাঁধের একটি অংশ ধসে পড়েছে। শিডিউলে উল্লেখ আছে মাটি ও জিও ব্যাগ দ্বারা টেকসই বাঁধ নির্মাণের। কিন্তু যে পরিমাণ জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ দেওয়ার কথা বাস্তবে তা করা হয়নি। বাঁধ রক্ষায় বাঁশের পাইলিংও ছিল নড়বড়ে। যে কারণে বাঁধ নির্মাণের ৮ দিনের মাথায় নদীতে প্রবল স্রোতে বাঁশের পাইলিং ভেঙে জিও ব্যাগ দেবে হুমকির মুখে পরেছে ওই বাঁধ। আসছে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানির স্রোতে এ নির্মাণাধীন বাঁধ টিকবে কি-না তা নিয়ে স্থানীয়রা সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্মাণাধীর বাঁধের পাইলিং ভেঙে জিও ব্যাগ নদীতে দেবে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা দেবে যাওয়া স্থানে নতুন জিও ব্যাগ ফেলে তা মেরামত করছে।
ঠিকাদার স্বপন মৃধার তত্ত্বাবধায়ক মো. সেলিম মিয়া বলেন, ঠিকাদার আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছে আমি সেভাবেই কাজ করছি। দেবে যাওয়া অংশে নতুন জিও ব্যাগ ফেলে ঠিক করে দিচ্ছি। ঠিকাদার স্বপন মৃধা বলেন, শিডিউলে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় জিও ব্যাগ তৈরি করেই বাঁধ নির্মাণ করেছি। এখানে কোনোরকম অনিয়ম করা হয়নি।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) আজিজুর রহমান সুজন মুঠোফোনে বলেন, নির্মাণাধীণ বাঁধে দেবে যাওয়া স্থানে নতুন করে জিও ব্যাগ ফেলে ঠিকাদার বাঁধ ঠিক করে দিচ্ছেন। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলৗ মো. কায়সার আলম মুঠোফোনে বলেন, বাঁধ দেবে যাওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। দেবে যাওয়া বাঁধ মেরামত করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের কাজের বিষয়ে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply