রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন
গৌরনদী প্রতিনিধি :২০১৫ সালে হরতাল অবরোধ চলাকালে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া নামক স্থানে রাতের আধারে চলন্ত ট্রাকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে অজ্ঞাতনামা দূর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাক চালক সহ তিন জন নিহত হন। গত ফেব্রæয়ারি মাসে ২৭ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডি। মঙ্গলবার মামলার আসামি সাবেক চার ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন বিএনপি নেতাকর্মী বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মোঃ ইফতেখার আহমেদ আসামির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। পরবর্তিতে আসামিদের বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাগারে পাঠানো নেতাকর্মীরা হলেন, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বার্থি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোসেন মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জু হোসেন মিলন, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার সাদাত তোতা, খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকন সিদ্দিকুর রহমান, গৌরনদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক ও মাহিলাড়া ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি মোঃ লোকমান হোসেন মৃধা, মাহিলাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন সিকদার, মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মোঃ সজল সরকার, চাঁদশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ সোবাহান সরদার, উপজেলা যুবদল সদস্য মো. সাহিন সরদার, দেলোয়ার সরদার, কামরুল সরদার, মোঃ রহিম হাওলাদার ও রুবেল গোমস্তা।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি জামাত সহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচী পালনের সময় ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রæয়ারী গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ মাহিলাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপর মুরগির খাবার বোঝাই ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬৯৩২) রাতের আধারে অজ্ঞাতনামা দুর্র্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এ সময় ট্রাকে থাকা চালকসহ মোঃ মোতালেব শেখ, ইজাইদুল মিয়া ও ফরিদ বিশ্বাস আগুনে দগ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় ওই দিন গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ জুবায়ের হোসেন বাদী হয়ে বিএনপি জামাতের ৩২ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ্র করে ও অজ্ঞাতনামা ২০ জনকে আসামি করে গৌরনদী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তকালীন সময়ে চার বছরে দফায় দফায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে ২০১৮ সালে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।
সর্বশেষ বরিশাল জেলা সিআইডি পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ খন্দকার ফেরদৌস আহম্মেদ ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর উল্লেখিত আসামিসহ বিএনপি-জামাতের ২৭ নেতা কর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, শান্তিপূর্ন গনতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সরকার দলীয় সন্ত্রাসী ও তাদের নিয়োগকৃত এজেন্টরা ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন সাক্ষপ্রমান না পাওয়ায় বার বার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে পরিশেষে মনগড়াভাবে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। আমি অনতিবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধো দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
Leave a Reply