শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
.আগের সব ইস্যুতে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ছক কষছে বিএনপি-জামায়াত। সরকার পতন ঘটানোর কোটা আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী লর্ড কারলাইল ইস্যু সামনে এনে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত এই দুই দল। এরপর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং যাতে বাংলাদেশ সফর না করেন সেজন্য আন্তর্জাতিক লবিস্টের মাধ্যমে চেষ্টা করে শুধু ব্যর্থই হয়নি, বরং বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। লন্ডনে বসবাসরত সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক লবিং শুরু করেছে বিএনপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আবার নতুন ইস্যু সামনে আনার ছক কষছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা।
গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পলাতক অবস্থায় লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্যোগেই সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার নামে দেশের আইনজীবীর প্যানেলের সঙ্গে যুক্ত করা হয় লন্ডনের আইনজীবী লর্ড কারলাইলকে। লর্ড কারলাইলকে আইনজীবী নিয়োগের আড়ালে সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লবিং করার জন্য নিয়োগ দিয়ে ইস্যু দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়। বাংলাদেশে আসার জন্য লর্ড কারলাইল ভিসার আবেদন করে পাবেন না তা জেনেও ভিসার আবেদন করেন তিনি। সরকার তার ভিসার আবেদন নাকচ করার আগেই তিনি ভারতের ভিসা নিয়ে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট করার ইস্যুকে সামনে এনে ভারতে আসেন। তার ভারতে আসার আগে পরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ভারত সফর করেন এবং ভারতের থিং ট্যাঙ্কে বুঝিয়ে শুনিয়ে পক্ষে টানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ভারত সরকার যখন লর্ড কারলাইলের মতলবটি বুঝতে পারেন তখন তাকে ভারতের বিমানবন্দর থেকে ফিরতি ফ্লাইটে ফেরত পাঠায় লন্ডনে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশাল অঙ্কের পাউন্ড হালাল করার জন্য প্রথমে তিনি হুঙ্কার ছুড়ে তর্জন গর্জন করলেও পরে চুপসে যান।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির আইনজীবীর আড়ালে আন্তর্জাতিক লবিস্ট লর্ড কারলাইলের ঘটনার রেশ না কাটতেই বিএনপির কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেন ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে অস্বস্তিতে পড়া লন্ডনে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমান মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। বিএনপির আন্তর্জাতিক লবিস্টের পক্ষ থেকে শত অনুরোধ উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সফরে আসেন রাজনাথ সিং। বাংলাদেশ সফর না করার জন্য ভারত সরকারের একজন নীতি-নির্ধারকের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করেন তারেক রহমান। নির্বাচনের পূর্বে রাজনাথ সিংকে বাংলাদেশ সফর না করার জন্য সেই নীতি-নির্ধারককে বিশেষ অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু সরকারী সফর এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই বাংলাদেশে সফর করেন রাজনাথ সিং। তাই সফর বাতিল না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন সেই ভারতীয় নীতিনির্ধারক। ভারত সরকারের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ। ব্রিটেনের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারতের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তারেক রহমানের ভয়ের জায়গাটা হলো, বাংলাদেশ যদি ভারত সরকারকে দিয়ে ইংল্যান্ডের কাছে তারেক রহমানকে ফেরত চায় তাহলে তার আর উপায় থাকবে না। ব্রিটেন নিশ্চিতভাবে ভারতের অনুরোধ ফেলতে পারবে না। আর বাংলাদেশে এলেই তো সরকার তারেকের অপকর্মের উপযুক্ত বিচার করে শাস্তি নিশ্চিত করবে। বিএনপিকে যে ভারত কোনমতেই সমর্থন করছে না তা স্পষ্ট বুঝতে পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান। বাংলাদেশ সরকার তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে শাস্তি নিশ্চিত করতে ভারতের সাহায্য চাইবে এবং ভারত সরকার যদি এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় তাহলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে, সেটি ভেবেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বিএনপির বর্তমান কর্ণধার তারেক রহমান।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, তারেক রহমান তদ্বির করে লাখ লাখ পাউন্ড খরচ করে লন্ডনে আরামদায়ক জীবন যাপন করছেন। বিদেশের মাটিতে বসেই যখন চাঁদাবাজি করে লাখ লাখ পাউন্ড কামাই করা যায়, তখন দেশে ফিরে জেল খাটার কোন অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন না তারেক রহমান। ভারত সরকারকে এত অনুরোধ করেও লাভ হলো না বিএনপির। ভারতকে সব কিছু উজাড় করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েও সুফল পেল না বিএনপি। অবস্থা বেগতিক দেখে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারকে শায়েস্তা করার জন্য লর্ড কারলাইলের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক চক্রান্ত শুরু করেছেন তারেক রহমান।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, কোটা আন্দোলন বেগবান করতে লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান। কোটা আন্দোলন আরও সংগঠিত (অর্গানাইজড) করতে টেলিফোনে কথোপোকথনের মাধ্যমে নির্দেশ দেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মামুনকে। লন্ডনে অবস্থানকারী তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাকায় অবস্থানরত অধ্যাপক মামুনের টেলিফোন কথোপোকথনের অডিও টেপটি এখন পরীক্ষা করছে গোয়েন্দা সংস্থা। তবে তার আগেই বিএনপির দলীয় নেতাদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করেন তারেক রহমান। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মৃত্যু ও রগ কাটার মতো উস্কানিমূলক মিথ্যা তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) প্রচার করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যারা সহিংস করে তোলাসহ ভিসির বাসভবনে পৈশাচিক বর্বরোচিত হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় তাদের বিষয়ে দায়ের করা মামলাগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তৃপক্ষের কাছে এখন তদন্তাধীন।
গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাংলাদেশ সফর, লন্ডনের আইনজীবী লর্ড কারলাইলকে ভারত থেকে ফিরতি ফ্লাইটে পাঠিয়ে দেয়া, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণের ছাত্র-ছাত্রীদের আড়ালে বিএনপি-জামায়াতের মদদে কোটা আন্দোলন ইস্যুতে ষড়যন্ত্রের ছক কষেছিল বিএনপি-জামায়াত। সরকারের পতন ঘটানো, সরকারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলা, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটানো ইত্যাদি ইস্যুর আড়ালে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রের আন্তর্জাতিক ছক কষছে। আন্তর্জাতিক লবিস্টদের মাধ্যমে অশুভ শক্তির সহায়তায় কলকাঠি নেড়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি। সুত্র জনকন্ঠ
Leave a Reply