বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী মো. হাফিজ ইব্রাহিম তার নির্বাচনী এলাকা বোরহানউদ্দিনে আসা উপলক্ষে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে রোববার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী নেতাকর্মীদের ১৬টি মোটর সাইকেল। ভাংচুর করা হয়েছে ৫টি মাইক্রোবাস, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস,৩টি মোটর সাইকেল এবং সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও ল্যাপটপ।
এ ঘটনার জন্য হাফিজ ইব্রাহিমকে দ্বায়ি করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ আলী আজম মুকুল বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে হাফিজ ইব্রাহিম ২০০১ সালের মতো এলাকায় সšন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত, আগুন দিয়ে মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া ও অফিস ভাংচুর চালিয়েছে। যা সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নস্ট করছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর রোববার ঢাকা থেকে নির্বাচনী এলাকা বোরহানউদ্দিন আসেন বিএনপি প্রার্থী মো. হাফিজ ইব্রাহিম। তার আগমকে ঘিরে ভোর থেকে উপজেলার হাকিমুদ্দিন, উদয়পুর রাস্তা মাথা সহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। বোরহানউদ্দিন পৌরসভার কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দে হারু হাওলাদার জানিয়েছে, টবগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান চৌধুরী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা সকালে দৌলতখান রাস্তা মাথা এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে বিএনপির সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা চালায়।
এসময় তাদের মারধর করে ৯টি মোটর সাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। উপজেলা যুবলীগ সভাপতি তাজউদ্দিন খান জানান, উদয়পুর রাস্তার মাথা, হাকিমুদ্দিন রোডের কয়েকটি স্থানে বিএনপির লোকজন হামলা চালিয়ে তাদের ৪০/৫০ জন নেতাকর্মীকে আহত করেছে। নির্বাচনী অফিস ও মাইক্রোবাস ভাংচুর করেছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পক্ষিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়্যারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ন কবিরের নেত্বত্ত্বে ৪ থেকে ৫শ’ সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হঠাৎ এ হামলা করে। আহতদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুল আহসান চৌধুরী, পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহব্বায়ক জোহেব হাসান, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, টবগী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক আক্তার হোসেনের নাম তাৎক্ষণিক জানা গেছে। অপরদিকে এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে এশিয়া টিভির জেলা প্রতিনিধি মোঃ অনিক আহম্মেদ ও আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মোঃ কাজী জামালকে লাঞ্চিত করে তাদের ক্যামেরা ল্যাপটপ ও লোগো সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে তারা জানান।
এদিকে রোববার দুপুরে উপজেলা সড়কের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলণ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ আলী আজম মুকুল। এসময় তিনি বলেন, এলাকায় লেভেল প্লেইং ফিল্ড বিরাজমান। হাফিজ ইব্রাহিম ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করেছে। গণসংযোগে যাওয়া আওয়ামী লীগের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২০ টি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। ৫টি অফিস ভাংচুর করেছে। ২০০১ সালের সন্ত্রাসের জনপদ আর যেন আমাদের চোখের সামনে ভাসছে। হাফিজ ইব্রাহিম এ শান্তির জনপদকে পুনরায় অশান্তির জনপদে পরিনত করাই তার লক্ষ্য।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, হাফিজ ইব্রাহিমকে বহনকারী লঞ্চটি দৌলতখান ঘাটে আসার পর সাধারণ যাত্রীদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হঠাৎ গুপ্ত হামলা চালিয়েছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলেও আলী আজম মুকুল জানান। এদিকে ঐক্যজোট প্রার্থী হাফিজ ইব্রাহীম পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান,উল্টো আ’লীগ কর্মীরা তাকে এলাকায় ঢুকতে বাঁধা দিয়ে দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিনে তাদের ২০-২৫ জন কর্মীর উপর হামলা করে গুরুতর আহত করেছে। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বোরাহনউদ্দিন থানা ওসি অসীম কুমার সিকদার জানান, ৯টি মোটর সাইকেল অগ্নি সংযোগ ও ৫টি মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়েছে। আ’লীগের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
Leave a Reply