সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
তালতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের অংকুজান পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন (৫০) গত ১৪ বছর যাবত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনের সেবার কাজ করছেন।
ইসমাইল হোসেন দীর্ঘ ১৪ বছরে প্রায় তিন হাজারের অধিক লাশ দাফন সেবা করেন, তিনি এ কাজে কোন ধরনের টাকা নেন না তিনি দুস্থ ও গরিব মানুষের দাফনের কাপড়সহ প্রয়োজনে খরচপত্র দেন। পেশায় ইসমাইল হোসেন একজন কৃষক। কাজের ফাঁকে লাশ দাফনের সেবায় প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ইসমাইল হোসেন উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত মো. ছন্দু প্যাদার ছেলে।
জানা যায়, ১৫ ই নভেম্বর ২০০৭ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের উপকূলীয় জেলা বরগুনার তালতলী উপজেলা অসংখ্য মানুষ মারা গিয়েছিল ও গণকবরে মানুষ দাফনের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় বহু মানুষকে সহযোগিতা করেছেন ইসমাইল হোসেন, আবার অনেক মৃত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছেন তিনি।
সিডরের সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ইসমাইল হোসেন একটি টর্চ লাইট নিয়ে নেমে পড়েন স্বজনদের খোঁজে, স্বজনদের খোঁজে যাওয়ার সময় অসংখ্য মৃত মানুষের লাশ দেখেন তিনি।
একটি ব্রিজের গোড়ায় দেখেন ১৩টি লাশ সারিবদ্ধভাবে পড়ে আছে। ওই ১৩ জনের লাশ দাফন এর মধ্য দিয়ে দাফন সেবার কাজের অভিজ্ঞতা শুরু হয় ইসমাইল হোসেনের।
এরপর থেকেই বিভিন্ন কবরস্থানে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন সেবার কাজ করেন। তিনি প্রায় ১৪ বছর ধরে দাফনের সেবায় যুক্ত আছেন।
ইসমাইল হোসেন জানান, গত ১৪ বছরে তিন হাজারেরও বেশি লাশ দাফন সেবার কাজ করেছেন। লাশ দাফনের পরে অনেক মানুষ টাকা পয়সা দিতে চেয়েছে কিন্তু তিনি নিঃস্বার্থে এসব কাজ করেন। এসব কাজ করে তিনি মনে একটা তৃপ্তি পান।
তিনি আরও বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মৃত ব্যাক্তির লাশ দাফন সেবার কাজ করে যাবেন।
Leave a Reply