বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন
ইমতিয়াজুর রহমান।।ভোলা : নাব্যতা সংকটে ভোলা-বরিশাল,ভোলা-ঢাকা, ও ভোলা-লক্ষ্মীপুরসহ এসব নৌ-রুট লঞ্চ ফেরি চলাচল ব্যাহত।দ্বীপের রানী ভোলা জেলায় মেঘনা-তেতুঁলিয়া নদীকে ঘিরে ভোলার বুকে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্যা নদী। আর এই নদীকে কেন্দ্র করে এই অ লের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা আর ব্যবসা বাণিজ্য।
ভোলার এসব নদীগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবুচর। এসব ডুবুচরে শীতের মৌসুমে আটকে পড়ছে যাত্রীবাহী ল ও পণ্যবাহী ফেরি।নাব্যতা সংকটে ও ডুবুচরের কারনে ঝুকিঁপূর্ণ হয়ে উঠেছে নৌ চলাচল।
ভোলার ভেদুরিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর দুই কিলোমিটার, মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরের এক কিলোমিটার ও লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী ঘাটের রহমত খালী চ্যানেলের এক কিলোমিটার ভাটার সময় সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।এছাড়া কুয়াশার কারণে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও ফেরিগুলো নদীর মধ্যে ঘণ্টার পর আটকে থাকছে। ফেরি চলাচল করছে জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করে।
এতে সময় ও বিড়ম্বনা বেড়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় বয়া ও মার্কার বাতি না থাকায় কুয়াশা ও ভাটার সময়ে লঞ্চ চালাতে বিপাকে পড়তে হয় চালক ও মাস্টারদের.এসব নৌ-রুটের বিভিন্ন স্থানে ডুবোচরের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলকারী লঞ্চ ও ফেরিগুলো নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেনা।
এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের। নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য দ্রুত সঠিক ভাবে ড্রেজিংয়ের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
এমভি ক্রিষ্টাল ক্রুজ লে র মাস্টার মো. কামাল হোসেন বলেন, ডুবচরের কারণে দিন দিন লঞ্চ চলাচল করতে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে ভোলা খাল থেকে বের হতেই সময় লেগে যায় ৩ থেকে ৪ ঘন্টা। যাত্রীদের ভোগান্তির কারণে যাত্রী সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এমভি কর্ণফুলী লে র মাস্টার শহীদ মাস্টার বলেন, ভোলা খাল থেকে বের হতেই আমাদের কয়েক ঘন্টা লেগে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভেদুরিয়া, পাঙ্গাসিয়া এলাকায় গেলেই আমাদের কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় জোয়ারের জন্য।
এখান থেকে বের হতে অনেক বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হচ্ছে। গত বছর ড্রেজিং করছে, এ বছর ড্রেজিং করছে অথচ কাজের কাজ কিছু হচ্ছেনা।
ভোলা-বরিশাল লঞ্চ এর মাস্টার মানিক বলেন, ড্রেজিং করে এপাশের মাটি ওপাশে ফালায় কিন্তু কোন কাজই হচ্ছেনা। তাই দ্রুত পরিকল্পিত ভাবে ড্রেজিং করা না হলে অচিরেই এসব নদী পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
লালমোহন নাজিরপুর ঘাটের ব্যবসায়ী মাকসুদুর রহমান বলেন, এসকল ডুবোচর ও নাব্যতা সঙ্কটের কারণে অনেক সময় লঞ্চ ঘাটে ভিড়তে না পাড়ায় ছোট ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই করে ঝুঁকি নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী নদী পাড়ি দিয়ে লে ওঠা নামা করতে হয় যাত্রীদের। এতে করে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি দক্ষিণা লের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সার্বিক অর্থনীতি কর্মকাণ্ড ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একই অবস্থা ভোলা-লক্ষীপুর ও ভোলা- বরিশাল ফেরি রুট গুলোতেও। এখানেও বিভিন্ন রুটের পণ্যবাহী ট্রাক এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
ফলে দুর্ভোগ লেগেই থাকে এই রুট গুলোতে। নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচলে সমস্যার কথা জানিছে কৃষাণীর মাস্টার মো. মোসায়েদুল ইসলাম ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিসের শিগগিরই ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।
ভোলার লঞ্চ ব্যবসায়ীরা বলেন, নাব্যতার কারণে লঞ্চ পরিবহনের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে হুমকীর মুখে পড়ছে এই ব্যবসা। তাই নৌ রুট সচল রাখার জন্য সঠিক ভাবে সচ্ছতার সঙ্গে ড্রেজিং করা উচিত।
ভোলা (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-বন্দর ট্রাফিক অফিসার নাসিম আহমেদ বলেন,ভোলা থেকে প্রতিদিন ঢাকা-বরিশাল রুটে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় ল ও ৫টি ফেরি চলাচল করে। নৌ পথে নাব্যতা রোধ করার জন্য ইতিমধ্যে কিছু কিছু পয়েন্টে ডেজিং চলছে।
বাকি পয়েন্ট গুলোতে ডেজিং করানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরি অচিরেই ডেজিং করানো হবে। ভোলায় নাব্যতা সংকটে নৌ-পথ, লঞ্চ ফেরি চলাচল ব্যাহত
Leave a Reply