নদীর ভাঙন: তালিকা হলেও সহায়তা পায়নি পরিবারগুলো Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




নদীর ভাঙন: তালিকা হলেও সহায়তা পায়নি পরিবারগুলো

নদীর ভাঙন: তালিকা হলেও সহায়তা পায়নি পরিবারগুলো

নদীর ভাঙন: তালিকা হলেও সহায়তা পায়নি পরিবারগুলো




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ প্রতি বছর লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি হরিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েন শত শত পরিবার। ওই পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করতে বিভিন্ন সময় তালিকা তৈরি হলেও তাদের তা বাস্তবায়ন হয়নি।

 

এমনকি প্রধানমন্ত্রী’র ‘জমি আছে, ঘর নেই’ কর্মসূচির ঘরও জুটছে না নদীভাঙা পরিবারগুলোর ভাগ্যে। ফলে ঘরবাড়ি ফেলে রাস্তার ধারে ও বাঁধে মানবেতর জীবনযাপন করছেন লালমনিরহাটের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

 

 

জানা যায়, ভারত সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের উত্তর সীমান্তে ধরলা আর দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে খরস্রোতা তিস্তা নদী প্রবাহিত। এ দুই নদী অনেকটাই জেলার সীমানা প্রাচীর তৈরি করেছে। প্রতিবছর দুই নদীর দুইপাড় ভেঙে জেলাকে ছোট করে ফেলছে। জন্মলগ্ন থেকে এ দুই নদী খনন না করায় পালিমাটি আর বালু জমে তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে পানি প্রবাহের পথ না পেয়ে সামান্য বৃষ্টি আর উজানে ঢেউয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে বন্যা হয়।

 

 

পানি কমতে শুরু করলে নদীর তীরে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুক চিরে অসংখ্য চর জেগে ওঠে। ধু ধু বালুময় চরাঞ্চলের কয়েক হাজার হেক্টর জমি সেচের অভাবে অনাবাদি হয়ে পড়ে। এভাবে বন্যা, নদীভাঙন ও খরার মতো প্রকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে নিত্য লড়াই করে চলতে হয় এ জনপদের মানুষকে।

 

 

প্রতিবছর বন্যা ও নদীভাঙনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে জেলার অর্থনীতির চাকা। বন্যার মতো প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আগে থেকে খাদ্য সঞ্চয় করে রাখেন নদী তীরবর্তী জনপদের মানুষ। কিন্তু এ বছর করোনা দুর্যোগের কারণে কর্মহীন থাকায় বন্যার জন্য সঞ্চিত খাদ্য বন্যার আগেই শেষ করে ফেলেছেন অনেকেই। এরপরও এবারে বন্যার স্থায়িত্ব ছিল দীর্ঘ। নদীভাঙনও তীব্র আকার ধারণ করে। ফলে নদী তীরবর্তী এ জনপদের ছিন্নমূল মানুষগুলো চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

 

 

নদীপাড়ের মানুষগুলো জানান, চলিত বছরের জুন মাসের শেষ দিকে বন্যা শুরু হয়। থেমে থেমে এ বন্যা আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। প্রতি বন্যায় ৫-৬ দিন পর্যন্ত পানিবন্দি থাকতে হয়। বন্যার পানি কমে গেলেই নদী তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনের মুখে স্বপ্নে লালিত ভালবাসার প্রিয় বসতভিটাসহ আবাদি জমি বিলীন হয়ে যায়।

 

 

নদীর করাল গ্রাসে বিধ্বস্ত গ্রামের পর গ্রাম ও স্থাপনা। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো ঘর বাড়ি ভেঙে উঁচু স্থানে বা রাস্তার ধারে সরাতে পারলেও জমির অভাবে নতুন বাসস্থান নির্মাণ করতে পারছেন না। ফলে রাস্তার ধারে অন্যের বাঁশঝাড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

 

 

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া মৌজার সিংগিমারী গ্রামটি ঈদুল আজহার রাত থেকে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়েছে। তীব্র ভাঙনে দিশেহারা পরিবারগুলো কেউ কেউ কিছু আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে পারলেও অনেকের ঘরসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তিস্তার স্রোতে ভেসে গেছে। গ্রামটির ৩-৪শ’ পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

 

 

এ গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, তিনটি ঘরের একটি বিক্রি করে বাকি দুইটি ঘর সরানোর খরচ মিটিয়েছি। জমি আর প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে বাকি ঘর দুইটিও তৈরি করতে পারিনি। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত সরকারি সহায়তা পাইনি।

 

 

এদিকে নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো আর্থিক সঙ্কটের কারণে চড়া সুদে দাদন ব্যবসায়ীর কাছে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন। চড়া দামে কেউ কেউ ভাড়ায় জমি নিয়ে বাড়ি করছেন।

 

 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার শাম্মী কায়সার বলেন, গত অর্থবছরের বরাদ্দ থেকে নদীভাঙনের শিকার ৪৬টি পরিবারকে পরিবারপ্রতি ৭ হাজার টাকা করে পুনর্বাসনের সহায়তা দেয়া হয়েছে। নতুন করে ৭৩০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য টিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে বিতরণ করা হবে।

 

 

লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, শুধু নদীভাঙা পরিবার নয়, তালিকা করে প্রতিটি গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবেন না।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD