রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ অমাবস্যার জোঁ-এর প্রভাবে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দুই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে জেলা শহর বরগুনার সাথে তিন ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।
জানা গেছে, অমাবস্যার জোঁ-এর প্রভাবে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে উপকূলীয় আমতলী ও তালতলী উপজেলার চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। বেড়ি বাঁধের বাইরের বসবাসরত মানুষের বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে।
জোঁ-এর পানিতে আমতলী পৌরসভার ও উপজেলার আমুয়ারচর, শ্মশানঘাট, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, লোচা, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, বৈঠাকাটা, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী ও নাইয়াপাড়া এবং তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া, ফকিরহাট, সোনাকাটা, নিদ্রাসকিনা, তেতুঁলবাড়িয়া, গাবতলী, মৌপাড়া, ছোটবগী, জয়ালভাঙ্গা ও পচাঁকোড়ালিয়া এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়ে বেড়িবাঁধের বাহিরে থাকা সহাস্রাধিক পরিবারগুলোর ঘর বাড়ি তলিয়ে যায়। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে আমতলী-পুরাকাটা ফেরি ঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় বেলা সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১.৩০টা পর্যন্ত জেলা শহর বরগুনার সাথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে যানবাহন ও মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভুক্তভোগী মানুষ হাঁটু পরিমাণ পানি ডিঙিয়ে সড়কে উঠছে।
ফেরিঘাটের পরিচালক আ. ছালাম বলেন, জোয়ারের পানিতে ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা জেলা সদরের সাথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।
আমতলীর গুলিশাখালী নাইয়াপাড়া গ্রামের জেলে বলহরি বলেন, অমাবস্যার জোঁ-এর প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পায়রা নদী সংলগ্ন চর ও নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
তালতলীর জয়ালভাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, পায়রা নদীর পানিতে ঘর বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছি।
অপরদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরটি জোঁ-এর পানিতে তলিয়ে যায়। বন্দরের ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য আ. বাতেন দেওয়ান বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় জোঁ-এর পানিতে গাজীপুর বন্দর তলিয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট বন্ধ করে মালামাল নিরাপদ স্থানে রেখে দিয়েছে। দ্রুত গাজীপুর বন্দরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দেয়ার জোর দাবি জানাই।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার আলম মুঠোফোনে বলেন, পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে দু’উপজেলার চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও কোথায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়নি। ঝুঁকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো আগেই সংস্কার করা হয়েছে।
Leave a Reply