রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ অপরাহ্ন
রিপন হাওলাদার ॥ বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ বরিশাল সদর খাদ্য গুমামে আগুনের আতংক সৃষ্টি করে হামলা চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে গত ১০/১২ দিন পূর্বে বরিশাল ফায়ার সার্ভিস এর ডিও পাশ হয়। গত মাসে বরিশাল খাদ্য গুমামে তাদের রেশন নেয়ার সময় ফায়ার সার্ভিস ও গুদাম কর্মকর্তাদের সাথে বাকবিতান্ডা হয়। সে সময় গুদাম কর্মকর্তা ও লেবাররা বলেছিলেন এই মাসে তাদের রেশন দেয়া ঠিক করে দিবে।
সেই ঘটনার জের ধরে এই মাসে রেশন আনতে গেলে তাদের সাথে তালবাহানা শুরু করে। এসময় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সাথে খারাব আচারন করলে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ফোন দিয়ে অনেক সদস্যদের নিয়ে প্রবেশ করে। বরিশালে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সাথে খাদ্য বিভাগের কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে।
রেশন দিতে বিলম্ব হওয়ায় সোমবার বিকেল ৩টায় নগরীর বান্দ রোডে সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের অন্তত ৫জন আহত হয়। সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিমাসের ন্যায় দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রেশন নিতে আসে। কিন্তু ওই সময় শ্রমিকরা ত্রিশ গোডাউন কাজে যায়।
তাদের একটু অপেক্ষা করতে বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উপ-খাদ্য পরিদর্শক হুমায়ুন কবির, উপ-সহকারী খাদ্য কর্মকর্তা তপন, নিরাপত্তা প্রহরী রেজাউল করিম ও রেজাউল করিম-২ কে বেদম মারধর করে।
এ সময় তারা সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকের কার্যালয় ভাংচুর করে এবং ফাইলপত্র নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। বরিশাল সদর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আলাউদ্দিন জানান, প্রতিমাসে তারা সদর উপজেলা খাদ্য অফিস থেকে রেশন উত্তোলন করেন।
গতমাসে তাদের রেশন কম দেওয়া হয়। পরিমাপে কম দেওয়ার প্রতিবাদ করায় খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আর রেশন দেবেনা এবং দিলেও তাদের ভোগান্তিতে ফেলার কথা হুমকি দেয়। এই ধারাবাহিকতায় গতকাল ফায়ার সার্ভিসের ৩জন কর্মী সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে রেশন আনতে গেলে খাদ্য বিভাগের কর্মচারীরা টালবাহানা শুরু করে।
তারা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের দির্ঘক্ষন বসিয়ে রাখে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা তাকে (মো. আলাউদ্দিন) চেয়ার দিয়ে আঘাত করে।
এ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের অন্যান্য সদস্যরা সদর খাদ্য অফিসে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ সহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কাউকে মারধর কিংবা ভাংচুর করেনি বলে দাবী সদর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আলাউদ্দিনের।
দুই সরকারী দপ্তরের কর্মচারীদের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শি সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম সরকারী কোয়াটারে থাকার তার স্ত্রী জানান, ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের হাতে লোহার রড ছিলো এবং গাড়িটি হুইছাল দিয়ে খাদ্য গুদামের মধ্য প্রবেশ করে আর বলে এখানে আগুন লাগছে। এমন কথা বলে আর ভাংচুর করেছে।
এসময় সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম’র স্ত্রী বাধা প্রদান করতে আসলে তাকেও লাঞ্চিত করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শদনে আসেন বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। তিনি ঘটনাস্থল পরির্দশন শেষে জানান, আমরা পুরো বিষয়টি দেখছি এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। যারা দোষি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply