রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ সিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি ও ভগিরাতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করা স্মৃতিমনিই বর্তমানে আলোচিত চিত্র নায়িকা পরীমনি। মঠবাড়িয়া উপজেলার ভগিরাতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শামসুল হক গাজী হলেন তার নানা।
সালমা বেগম ও মনিরুল ইসলাম দম্পতির একমাত্র সন্তান পরীমনি। জন্মের তিন বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। তখন থেকেই নানা শামসুল হক গাজী কোলেপিঠে করে বড় করেন তাকে। বাবার মৃত্যু হয় ২০১২ সালে। বাবা-মা নাম রেখেছিলেন শামসুন্নাহার স্মৃতি। ডাকনাম স্মৃতিমনি। ঢাকায় শোবিজের ঝলমলে জগতে এসে নাম ধারণ করেন পরীমনি।
গত বুধবার রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে মাদকসহ গ্রেফতার হন পরীমনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ নিয়ে আলোচিত চিত্র নায়িকা পরীমনির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী ভান্ডারিয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। চলছে নানা গুঞ্জন। নানাবাড়িতেই শৈশব কেটেছে পরীমনির।
সিংহখালী নানাবাড়িতে এখন থাকেন পরীমনির ছোট খালা তাসলিমা বেগম ও তার স্বামী জসিম উদ্দিন। পরীমনি সময় পেলেই ছুটে যান শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত নানাবাড়িতে। এলাকার সাধারণ মানুষদের চোখের সামনে বেড়ে ওঠা শামছুননাহার স্মৃতি যে একদিন সারা দেশে এমন আলোচনায় আসবে তা কি কেউ ভাবতে পারেননি। তাই এ নিয়ে অনেকের চোখে বিস্ময়। পাশাপাশি চলছে নানা গুঞ্জন, কানাঘুষা।
ছোট খালা তাসলিমা বেগম বলেন, সবকিছুই চক্রান্ত। জনপ্রিয়তার কারণে পরিকল্পনা করে পরীমনিকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তিনি।
এলাকার বাসিন্দা নুরজাহান বেগম বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে শামছুননাহার স্মৃতিকে দেখেছি, সে ওই রকম মেয়েই নয়। তার আচরণ অনেক শান্ত স্বভাবের। এমন ঘটনা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন।
আরেক বাসিন্দা রেহেনা বেগম বলেন, এই এলাকার স্কুলেই পরী পড়াশোনা করেছে। কখনো এমনটা মনে হয়নি। তাঁর নানা ভগিরাতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। তিনি অনেক ভালো মানুষ। তার পরিবারের প্রায় সবাই শিক্ষক। ভালো পরিবারের মেয়ে পরী, সে কখনো এমনটা করতে পারে এটা মানতে পারছি না।
পরীমনির ছোট খালা তাসলিমা বেগম বলেন, হঠাৎ করে চলচ্চিত্র জগতে বেশি জনপ্রিয়তাই পরীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরীর সঙ্গে যা ঘটেছে সেটি চক্রান্ত মনে হচ্ছে। এর আগেও ওকে বাধ্য করা হয়েছিল। মেরেও ফেলতে চেয়েছিল। যা পরী বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মিডিয়াকে জানিয়ে আসছে। আমরা এই ঘটনার পেছনে যারা আছেন, তাদের সম্পর্কে জানতে চাই। পরী সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমরা পরীর মুক্তি চাই।
পরীমনির ছোট খালু শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, ছোটবেলা থেকে নানাই তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন। আমরা কেউই চাইনি সে এই জগতে আসুক, হয়তো তার প্রতিভা ছিল। প্রতিভার কারণেই আজ তার এই অবস্থা হয়েছে। নানার প্রতি সে অনেক দুর্বল। যেখানে তার নানা থাকে, সেখানে এমনটা আমরা বিশ্বাস করতে পারি না। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজধানীর বনানীর নিজ ফ্ল্যাট থেকে পরীমনিকে আটক করে র্যাব। সেই বাসাতে নানাকে সঙ্গে নিয়ে থাকেন পরীমনি। আটকের সময় তিনি বারবার অনুরোধ করছিলেন যেন তার নানাকে কিছু জানানো না হয়।
Leave a Reply