রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনা সদরে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে ফের দাবি করেছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।শনিবার (২০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বরগুনা জেলা কারাগারে মিন্নির সঙ্গে দেখা করেন তার পরিবার। পরে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।
তিনি বলেন, মিন্নি আমাদের জানিয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে ও জোরজবরদস্তি করে তাকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে খুনিদের আড়াল করতে আমার মেয়েকে ফাঁসাচ্ছে শম্ভু (বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) ও শম্ভুপুত্র সুনাম (জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ)।
মোজাম্মেল বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার মেয়ে কোনোভাবেই জড়িত নয়। মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করিয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আমার মেয়েকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মিন্নিকে নির্দোষ দাবি করে তিনি আরও বলেন, সারাদেশবাসী দেখেছে, আমার মেয়ে তার স্বামীকে বাঁচাতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। রিফাত হত্যা নিয়ে শুরু হয়েছে নোংরা রাজনীতি। আমার মেয়ের কিছু হলে আত্মহত্যা করবো।
মিন্নিকে অসুস্থ দাবি করে তার বাবা বলেন, দুই মাস আগেও তার (মিন্নি) মানসিক চিকিৎসার জন্য ডাক্তার দেখিয়েছি। জেলখানায় তাকে দেখে আমার কান্না পেয়েছে; আমার মেয়েটা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। আমার মেয়ে এখন খুব অসুস্থ, তার চিকিৎসার প্রয়োজন।
এর আগে শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে রিফাত হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনায় মিন্নির ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়।
এর আগে, গত শনিবার মিন্নির শ্বশুর দুলাল শরীফ তার ছেলে রিফাত শরীফ হত্যার সাথে মিন্নি জড়িত বলে বক্তব্য দেন। একই সাথে মিন্নিকে আটক করারও দাবি জানান। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নেয়া হয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তার প্রমাণ পাওয়ায় রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
Leave a Reply