বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল এখন ডেঙ্গুর ঘর। উপজেলা জুড়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হলেও ডেঙ্গুর বংশ বিস্তারে গোটা হাসপাতাল যেন ডেঙ্গুর আবাসস্থল বানিয়ে রাখা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের বাথরুমে যেন কয়েক ইঞ্চি পানি জমে আছে। তাতে ভন ভন করছে মশা ও মাছি। শ্যাওলা ধরা বাথরুমের কোনে স্তপ করে রাখা ময়লা। হাসপাতালের ইনডোর থেকে আউটডোর সর্বত্রই ময়লার স্তুপ।
ড্রেন থেকে শুরু করে বাথরুমে তিন চার ইঞ্চি পরিমান ময়লা, দূর্গন্ধযুক্ত পানি জমে থাকায় মশা, মাছি ভোঁ ভোঁ করছে। হাসপাতালের বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার নিয়ম থাকলেও তা স্তুপ করে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য। রোগীরা নাক চেপে বাথরুমে গেলেও এ ময়লা পরিস্কারে কোন উদ্যোগ নেই। এ চিত্র বাহিরের। আর ভিতরের চিত্র আরও ভয়াবহ। দূর্গন্ধে রোগীরা অতিষ্ট হয়ে প্রতিতবাদ করলেই তাদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে পরিচ্ছন্ন কর্মী ও নার্সরা এ অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। কলাপাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে হাসপাতালের বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার জন্য চুল্লি করে দেয়া হলেও সেই চুল্লিটিই যেন ঢেকে দিয়েছে ক্লিনিকাল বর্জ্যতে। এরই মধ্যে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ হোসেন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বরিশালে প্রেরণ করা হয়েছে।
কলাপাড়া হাসপাতালে ইতোপূর্বে আরও চারজন ডেঙ্গু রোগী শণাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে সর্বশেষ ভর্তিরত চাকামইয়ার আকলিমা বেগম চিকিৎসার জন্য বরিশালে গেছেন। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আরও পাঁচজন ডেঙ্গু রোগী শণাক্ত হয়েছে। এনিয়ে কলাপাড়ায় এখন পর্যন্ত মোট ১০ ডেঙ্গু রোগী শণাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত কলাপাড়ায় মোট ২০টি কীট পেয়েছেন। কীট সঙ্কটের কারণে আসন্ন কোরবানির ঈদে ঢাকা থেকে আসা কোন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা নিয়ে সঙ্কটের শঙ্কা প্রকাশ করছেন কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকগণ।
সিপিপি’র কর্মী শহীদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হওয়ার জন্য আসে হাসপাতালই যদি হয় ডেঙ্গুর ঘর তাহলে মানুষ কোথায় যাবে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জে এইচ খান লেলীন বলেন, জনবল সংকটের অজুহাত এ অব্যবস্থাপনাকে দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিঁনি বলেন, হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারনে সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারছেন না। তারাও কাজ করছেন। তবে ক্লিনিক্যাল বর্জ্য পুড়িয়ে না ফেলে কেন স্তুপ করে রাখা হচ্ছে সে বিষয়ে কোন জবাব দেননি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান ও পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে এ দূরাবস্থা দেখে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন ।
হাসপাতালের ভিতর ও বাইরের এ ময়লা আবর্জনা দ্রুত পরিস্কার করার নির্দেশ প্রদান করেন। পৌরসভার পক্ষ থেকে ঔষধ ছিটানো ব্যবস্থা করা হয়। পৌরসভার পক্ষ থেকে ক্লিনিকাল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার জন্য চুল্লি করে দেয়া হলেও তাতে ময়লা না পুড়ে কেন স্তুপ করে রাখা হচ্ছে।
Leave a Reply