মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০ শতাংশ ভোট ভরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-০১ এ এ ধরনের বিস্ফোরক জবানবন্দি দেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে থাকা মামুন বর্তমানে আসামি থেকে রাজসাক্ষীতে পরিণত হয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারি মহল থেকে পরিকল্পিতভাবে ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ভরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ‘গোপালগঞ্জ সিন্ডিকেট’ নামের একটি গোষ্ঠী পুলিশ বাহিনীতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল।
মামুন আরও জানান, আন্দোলন দমন ও ভিন্নমত দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো এবং ব্লক রেইডের মতো সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক পর্যায় থেকে আসে। এ নির্দেশনা সরাসরি শেখ হাসিনা ও তার দফতর থেকে পাওয়া যেত। কখনো নির্দেশ দিতেন তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী। এসময় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ডিবি প্রধান হারুনকে তিনি ‘অতিউৎসাহী’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
সাবেক আইজিপি আরও বলেন, র্যাব-১ এর অধীনে টিআইএফ নামে একটি গোপন বন্দিশালা পরিচালিত হতো। সেখানে রাজনৈতিক বিরোধী এবং সরকারের সমালোচকদের আটক করে নির্যাতন চালানো হতো। অন্যান্য র্যাব ইউনিটেও এ ধরনের বন্দিশালা ছিল। তিনি দাবি করেন, আয়নাঘরে আটকে রাখা ও ক্রসফায়ারে হত্যা ছিল নিয়মিত কৌশল।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ২৪ মার্চ স্বেচ্ছায় মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং জানান তিনি সত্য উন্মোচনের স্বার্থে রাজসাক্ষী হতে চান।
এদিকে, এর আগে শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আহত আন্দোলনকারী, শহীদ পরিবারের সদস্য, প্রত্যক্ষদর্শী চিকিৎসকসহ ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রসিকিউশন আশা করছে, চলতি মাসেই সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ শেষ হবে।
Leave a Reply