শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি।।ভোলায় বিতর্কিত নানান কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস অবশেষে স্ত্রীর সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির মুখে বুধবার বোরহানউদ্দিন ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।তবে ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, এক মাস আগেই পদোন্নতি পেয়ে বরিশালে বদলী হন কুদ্দুস । বুধবার তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই ভোলা থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। পারিবারিক কিছু ঝামেলার কথা শুনেছেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
তবে স্থানীয়রা জানান, ইউএনও আ. কুদ্দুস বোরহানউদ্দিনে ইউএনও থাকা অবস্থায় একের পর এক ঘটনায় আলোচিত হন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, স্টাফকে লাঠি দিয়ে মারধর করে হাত ভেঙে ফেলা, ফেসবুকে লেখালেখির আক্রোশে এসএসসি পরীক্ষার্থী রুবায়েদ ওয়াদুদ গল্পকে পরীক্ষার হলে লিখতে না দিয়ে নাজেহাল করা, নিজের তৈরি উপজেলা প্রশাসন স্কুলের নামে প্রভাব বিস্তার করা, নিজের তৈরি তেঁতুলিয়া ইকোপার্কে রাতে অবস্থান, আড্ডা দেয়া, খেলার মাঠে দর্শনার্থীদের মারধর করা, এক বছরে নিজের নামে ৫টি বই প্রকাশ করা। এছাড়ও পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে তিনি এক বছর আগে বদলি হলেও তদবির করে বদলি ঠেকানোরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত মাসে তার পদোন্নতি হয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বরিশাল বদলি হন। কিন্তু তিনি ওই পদেও যোগ দিতে গড়িমসি করতে থাকেন। তার কিছু কাজ বাকি আছে, ওই কাজ শেষ করতে কিছু সময় বোরহানউদ্দিন থাকা প্রয়োজন এমনটা দাবি করে জেলা প্রশাসকের কাছে সময় চান ইউএনও কুদদূস।
এদিকে ইউএনও থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন তার স্ত্রী আফরোজা পারুল। তিনি স্বামী কুদ্দূসের বোরহানউদ্দিনে অবস্থানকে ভালো চোখে না দেখে দুদিন আগে ছুটে যান ওই এলাকায়।
বুধবার ইউএনও কুদ্দুস মোবাইল ফোন রেখে অফিসে গেলে ওই মোবাইল ফোনে কিছু আপত্তিকর ছবি দেখে ক্ষুব্ধ ওয়ে ওঠেন স্ত্রী। ঘরের কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করার পাশাপাশি ইউএনও কুদ্দুস বোরহানউদ্দিন ছেড়ে যাবে কি-না জানতে ছুটে যান অফিসমুখে।
খবর পেয়ে ইউএনও কুদ্দুস ও অফিস থেকে বের হয়ে এলে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে রাস্তায় প্রকাশ্যে ঝগড়া ও বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ সময় ইউএনও কুদ্দুস স্ত্রীকে সামাল দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এসব দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজ মুহূর্তে ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আহম্মেদ উল্লাহ মিয়াসহ স্থানীয়রা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।
আহম্মদউল্লাহ মিয়া জানান, ধস্তাধস্তির পরিবেশ ভালো ছিল না। একপর্যায়ে ম্যাডাম পারুল অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পরে খবর পেয়ে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারাও ছুটে যান। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনও কুদ্দুসকে পদোন্নতির কারণে ভোলা ছাড়তে বাধ্য করেন জেলা প্রশাসক।
Leave a Reply