শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া এলাকায় এক বাড়িতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বখাটে মো. মোসলেহ উদ্দিনকে (২০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৯ মার্চ) বিকালে ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে মোসলেহ উদ্দিনকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও ছাত্রীর পরিবার সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়তো। উপজেলার ভাদাদিয়া এলাকার রসুল আহম্মদের ছেলে মো. মোসলেহ উদ্দিন ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে মেরে ফেলার হুমকি বখাটে। ওই ছাত্রী ভয়ে এক পর্যায়ে তার ডাকে সাড়া দিলে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ঘটে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই ছাত্রীকে তার সঙ্গে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দেয়।
ছাত্রী বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানায়। তারা বিষয়টি সম্পর্কে বখাটে মোসলেহ উদ্দিনের পরিবারকে অবহিত করে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হয়নি। গত এক-দুই মাস যাবত বখাটে মোসলেহ উদ্দিন ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে প্রায় সময় তাকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতো। গত এক সপ্তাহ ধরে ছাত্রী বখাটে মোসলেহ উদ্দিনের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ছাত্রীর মা-বাবা তাকে ও তার ছোট বোনকে ঘরে রেখে ওষুধ আনতে সোনাগাজী পৌরবাজারে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর বখাটে মোসলেহ উদ্দিন বাড়িতে গিয়ে ছাত্রীর ঘরের দরজায় নাড়া দেয়। এসময় তার ছোট বোন দরজা খোলার পর বখাটে তাদের ঘরে ঢুকে ছোট বোনকে একটি কক্ষে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরে মেরে ফেলার ভয় ও বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে পাশের খাঁটে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে ছাত্রীর মা-বাবা বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে আসলে বিষয়টি ছাত্রী তার মাকে জানায়। তাৎক্ষনিক মেয়েকে নিয়ে তিনি বখাটে মোসলেহ উদ্দিনের মায়ের কাছে গিয়ে বিচার চাইলে, মোসলেহ উদ্দিনের মাতা অস্বীকার করে তাদেরকে তাড়িয়ে দেন। এরপর তারা সোনাগাজী থানা পুলিশকে অবহিত করলে রাতেই তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
ছাত্রী মা-বাবা বলেন, বখাটে মোসলেহ উদ্দিন প্রায় সময় তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। শুক্রবার ঘরে কেউ না থাকায় সে তার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। তিনি মোসলেহ উদ্দিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।
সোনাগাজী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) ডিএইচএন জহির রায়হান বলেন, রোববার (১০ মার্চ) ফেনী সদর হাসপাতালে ওই ছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা ও জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো: কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা ও ধর্ষককে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা রজ্জু করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিকে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মোসলেহ উদ্দিন ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১ মার্চ (শুক্রবার) রাতে উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকায় এক বাড়িতে আরেক সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া একছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায়ও পুলিশ অভিযুক্ত বখাটে শাহীন মাহমুদকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
Leave a Reply