রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩০ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: রাশেদ সীমান্ত, অভিনেতা। বর্তমানে তিনি কর্মরত আছেন বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের মার্কেটিং ইনচার্জ হিসেবে। অভিনেতা হিসেবেও তিনি জয় করে নিয়েছেন দর্শকদের হৃদয়। গত ঈদে তার অভিনীত তিনটি নাটক প্রকাশ হয়েছে। এগুলো হলো ‘ভাবির দোকান টু’, ‘মধ্যরাতের সেবা’ ও ‘জামাই বাজার’। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছে ‘মধ্যরাতের সেবা’ নাটকের শেষ দৃশ্যটি। জিয়াউর রহমান জিয়ার পরিচালনায় এতে তার সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন নাজিয়া হক অর্ষা। নাটক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন-এর মুখোমুখি হয়েছেন রাশেদ সীমান্ত।
প্রথমেই জানতে চাই, আপনার দেশের বাড়ি কোথায়?
আমার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে টঙ্গিতে। আর দাদা ও নানাবাড়ি ভোলায়। তবে খুব কমই আমার সেখানে যাওয়া হয়েছে। বলা যায়, হাতেগোনা ৫-৬ বার।
অনেকেই ভাবছেন, আপনার দেশের বাড়ি বরিশাল…
বরিশাল আর ভোলা, দুইটার ভাষা আলাদা। মজার বিষয় হচ্ছে, আমি প্রথম বরিশাল যাই গত রোজার ঈদে প্রচারিত ‘বরিশাল টু ঢাকা’ নাটকের সুবাদে। বরিশালের ভাষা বলার কারণে অনেকে ধরে নিয়েছেন, আমি বরিশালের ছেলে। আমি কিন্তু নোয়াখালি, পাবনা-সিরাজগঞ্জের ভাষাতেও নাটক করেছি। তবে বরিশালের ভাষা হয়তো আমার সঙ্গে একটু বেশি মানিয়েছে।
অভিনয়ে এলেন কীভাবে?
আমি বৈশাখী টিভির মার্কেটিং ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত আছি। আমি অনুষ্ঠানের প্রিভিউ কমিটির সদস্যও। আমার পর্যবেক্ষণ খেয়াল করতেন আমাদের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক টিপু আলম মিলন স্যার। তিনি আমাকে অভিনয়ে উৎসাহ দিয়েছেন। স্যারের উৎসাহে অভিনয়টাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করলাম। ২০১৮ সালে বৈশাখী টিভির ‘যেই লাউ সেই কদু’ নাটকে প্রথম অভিনয় করা। ওই নাটকের আমাদের প্রতিষ্ঠানের অনেকেই অভিনয় করেছেন। সবাই মিলে মজা করে কাজটি করেছি। দর্শকমহলেও এটি দারুণ প্রশংসিত হয়।
অভিনয়ে প্রতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা…
না, অভিনয়ে আমার প্রতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। আমি প্রকৃতি, চারপাশ ও জীবন থেকে দেখে দেখে শিক্ষা নিচ্ছি। কবি সুনির্মল বসুর ভাষায় বলতে হয়, ‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র।’
‘মধ্যরাতের সেবা’ নাটকটি ভাইরাল হবে, তা কি শুরুতে আঁচ করতে পেরেছিলেন?
অভিনয়ের সময় এমন কিছুই আঁচ করা যায়নি। তবে বুঝেছি ‘মধ্যরাতের সেবা’ দর্শকদের পছন্দ হবে। বিশেষ করে, শেষ দৃশ্যের কথা যদি বলি। শেষ দৃশ্যটি ধারণ করার পর দেখলাম, শুটিং ইউনিটের প্রায় ৩০-৪০ জন লোক সবাই কাঁদছেন। তখন বুঝলাম, দৃশ্যটা ভালো হয়েছে কিন্তু ভাইরাল হবে বুঝিনি।
দর্শকদের ফোন পেয়েছেন?
গত ঈদে আমার অভিনীত ৩টি নাটক প্রচার হয়েছে বৈশাখী টিভিতে। সবগুলো নাটকই দর্শক পছন্দ করেছেন। এ নিয়ে অসংখ্য ফোন পাচ্ছি। এর মধ্যে ‘মধ্যরাতে সেবা’ নিয়ে একটু বেশি ফোন পেয়েছি। ভালো লেগেছে, নাটকটি দেখার পর অনেকেই বলছে, আজ থেকে তারাও আবু তালেব (নাটকের চরিত্র) হতে চান। তারাও মধ্যরাতে বাইক নিয়ে এভাবে মানুষকে সেবা দিতে চান। দর্শকদের এমন সিদ্ধান্ত বা কথা, একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবে কত বড় আনন্দের তা বলে বোঝানো যাবে না।
আপনি কি কখনও মধ্যরাতে সেবা দিয়েছেন?
সারা দিন কাজ করার পর মধ্যরাতে সেবা দেওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে আমি সবসময় চেষ্টা করি মানুষের পাশে দাঁড়াতে, উপকার করতে। এমন অসংখ্য ঘটনা আমার জীবনে আছে। সবার প্রতি আমার একটা অনুরোধ থাকবে, আপনারা যে, যার অবস্থান থেকে প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করুন। তাহলে একদিন দেশটা সুখে-শান্তিতে ভরে যাবে।
সব শেষে জানতে চাই, অভিনয় নিয়ে আপনার ভাবনার কথা…
শুরু থেকে আমি কাজের ব্যাপারে বেশ সজাগ। ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে মাত্র ৯টি নাটকের কাজ করেছি। এগুলো প্রচারের পর অসংখ্য নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব পাচ্ছি। জনপ্রিয় অনেক নির্মাতা ও অভিনয় শিল্পীরা ফোন করে প্রশংসা করছেন। নিয়মিত অভিনয় করার ইচ্ছে আমার নেই। যদি গল্প-চরিত্র ভালো হয় তাহলে কাজ করা হবে।
Leave a Reply