শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
কামরুজ্জামান রানা//
ছাত্র রাজনীতি দিয়েই তাদের পথচলা শুরু। বয়সে তারা তরুণ হলেও রাজনীতিতে পুরনো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগের মাধ্যমে তারা স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় মাঠ দখল করে রেখেছেন। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার আগেই তারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দুঃস্থদের সেবা দেওয়া, স্বাবলম্বী হতে সহযোগিতা করা, নারীর ক্ষমতায়নসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করছেন। নিজে সহ স্ব স্ব দলের উন্নয়ন প্রচারণার উদ্দেশ্যে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন তারা। অপেক্ষাকৃত এই তিন তরুন প্রার্থীকে ঘিরেই সংসদীয় আসন দুটিতে ভোটের হিসাব-নিকাশ চলছে বলে জানা যায়। এরা হলেন বরিশাল-৫ (সদর) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য আরিফিন মোল্লা, বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসম্পাদক মিজানুর রহমান এবং একই আসনে কেন্দ্রীয় যুবমৈত্রীর সহ-সভাপতি ও বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল-৫ (সদর) আসনে কমপক্ষে পাঁচজন প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাচ্ছেন। তাদের মধ্যে আরিফিন মুল্লা ছাড়া অন্য কাউকে মাঠ পর্যায়ে এখনো দেখা যায়নি। যদিওবা দু’একজনকে দেখা যায় তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। দীর্ঘদিন থেকে তরুন রাজনীতিবিদ আরিফিন মোল্লা সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারন মানুষের কাছে তুলে ধরা অব্যাহত রেখেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি সদস্য আরিফিন মোল¬া বলেন, আশির দশক থেকে পারিবারিকভাবেই দুঃস্থদের সহায়তা করে আসছি। নির্বাচনী এলাকার কমপক্ষে এক লাখ নারী ও পুরুষকে চিকিৎসাসহ আর্থিকভাবে সহায়তা করে স্বাবলম্বী করেছি। যারমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই নারী। নারীদের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নানা পদক্ষেপকে এগিয়ে নিতেই নারীর ক্ষমতায়নে তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের সংগঠিত করেছি আমি। তিনি মনে করেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের টিকিট পেলে নারীরাই তার বিজয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন।
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে আসনে মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী আতিকুর রহমান দীর্ঘদিন থেকে দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। সপ্তাহের একটা বড় অংশই তিনি সময় দিয়ে থাকেন নিজের নির্বাচনী এলাকার জনগণকে। জনপ্রতিনিধি না হয়েও এলাকার উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসাধ্য সাধন করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সহযোগিতায়। আতিকুর রহমান বলেন, রাশেদ খান মেননের সহায়তায় দুই উপজেলায় তিনি প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করিয়েছেন। এছাড়া তিনি নদী ভাঙনরোধ এবং গরিব ও অসহায় রোগীদের জন্য দেহেরগতি ইউনিয়নে ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। রাশেদ খান মেননের নামে একটি দ্বিতল কমিউনিটি সেন্টারও স্থাপন করিয়েছেন। এছাড়া জলবায়ু তহবিলের প্রায় চার কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্প পাস করিয়েছেন। খুব শীঘ্রই সেই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, গত নয় বছরে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করে আসছি। যতদিন বেঁচে আছি জনগণের সেবক হয়ে থাকতে চাই। এছাড়াও তিনি মাদক ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের ব্যাপারে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজ করে আসছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যেভাবে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের মাঠ পর্যায়ে থাকা দরকার সেভাবে তাদেরকে পায়না এলাকার মানুষ। তবে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এই তিন তরুন প্রার্থী সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচার-প্রচারণায় ব্যাপক গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তার বর্তমান সংসদ সদস্যদের না পাওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীরাও অনেকটা ক্ষীপ্ত। তাইতো মনোনয়ন প্রত্যাশী এসব তরুন প্রার্থীদের সাথে গণসংযোগ ও প্রচারনায় অংশগ্রহণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা। যেকারণে এই নির্বাচনী এলাকা দুটিতে ব্যতিক্রমধর্মী প্রচার-প্রচারনায় নির্বাচনের জোয়ারে ভাসছে ওই তিন নবীন প্রার্থীর নির্বাচনী এলাকা।
Leave a Reply