রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি॥ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাত্র ১৫দিনের মধ্যেই ভাঙনের সুর বাজছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলে। এরইমধ্যে বিভিক্ত হয়ে পরেছে নেতৃবৃন্দরা। নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বাণিজ্য, বিতর্কিতদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা ও সুপার ফাইভ নেতাদের মূল্যায়ন না করায় এ ফাটল শুরু হয়েছে। অপরদিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে শোকজ করেছে স্থায়ী কমিটি।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বিরোধের কারণে সুপার ফাইভ নেতা ও তাদের অনুসারীদের দেখা মেলেনি সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে। খুব শীঘ্রই মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগ দায়েরের কথা জানিয়েছেন মূল্যায়ন না পাওয়া নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্র থেকে প্রায় এক বছর পূর্বে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সুপার ফাইভ কমিটি ঘোষনা করা হয়। এরপর স্বেচ্ছাসেবক দলের দুটি ইউনিটই দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন ঐক্যবদ্ধভাবে। কিন্তু বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর কমিটির ঐক্যে ফাঁটল ধরেছে। যার মূলে সদ্য ঘোষিত মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুজ্জামান বলেন, সভাপতি-সম্পাদক ছাড়াও সুপার ফাইভ কমিটিতে আমিসহ কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি জাহিদুর রহমান সমির ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান মোঃ আনোয়ার হোসেন রয়েছেন। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটিতে আমাদের মূল্যায়ন করেননি। আমরা রাজনীতি করছি। আমাদেরও কর্মী রয়েছে। তারা কমিটিতে পদ পাবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু তা হয়নি।
রাশেদুজ্জামান আরও বলেন, সভাপতি মাহাবুবুর রহমান পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মঞ্জু তাদের মতো করে কমিটির তালিকা করে কেন্দ্রে জমা দিয়েছে। তালিকা জমা দেয়ার পূর্বে একবারের জন্যও আমাদের দেখানো হয়নি। পূর্বে কমিটির তালিকা দেখতে চাইলে দেখছি-দেখাচ্ছি এবং আজ না কাল বলে ঘুরিয়েছে। সর্বশেষ তারা কেন্দ্র থেকে নিজেদের মনগড়া পকেট কমিটি অনুমোদন করিয়ে এনেছেন।
তিনি বলেন, গত ৭ আগস্ট ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট ঘোষিত কমিটির সহসভাপতি এবং যুগ্ম সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সহ গুরুত্বপূর্ণ পদে যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই বিতর্কিত এবং সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। অথচ দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে মাত্র পদ দেয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদ স্বরূপ আমরা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও এর আগে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর প্রস্তুতি সভায়ও অংশগ্রহন করিনি।
অপরদিকে দলের একাধিক নেতারা অভিযোগ করেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে মহানগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সর্বোচ্চ বাণিজ্য করেছেন। টাকার বিনিময়ে তারা পদ বিক্রি করেছেন। যে কারণেই পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে তারা বিতর্কিত করে তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে সংগঠনে অমূল্যায়ন হওয়া নেতৃবৃন্দরা আলোচনা করেছেন। খুব শিঘ্রই তারা কেন্দ্রে দেখা করে অপরাজনীতির বিষয়ে অভিযোগ করে ঘোষিত কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের দাবি করবেন।
অভিযোগের ব্যাপারে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান পিন্টুর বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, সুপার ফাইভ কমিটির যে তিন নেতা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচিতে আসতে পারেননি তাদের মধ্যে একজন অসুস্থ এবং দুইজন বরিশালের বাহিরে ছিলো। যে কারনে তার আসতে পারেননি। এখন তারা অবমূল্যায়নের অভিযোগ তুলে থাকলে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, নতুন কমিটিতে কোন বিতর্কিত বা সমাজ বিরোধী লোক নেই। কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। যা রাজনৈতিক মামলা। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদেরই মূল্যায়ন করা হয়েছে।
অপরদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দায়িত্বশীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল অঞ্চল) ও বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানকে শোকজ করেছে স্থায়ী কমিটি।
Leave a Reply