রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানসহ তিন জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত অপর দু’জন হলেন- বাজার সুপারিনটেনডেন্ট মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ও ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট মো. আজিজুর রহমান। সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার আগে তাদের তিনজনকেই কর্তৃপক্ষ নিজ দফতর থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত করেছিল। এদিকে কর্তৃপক্ষের নোটিশের জবাব না দেওয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আহসান উদ্দিন রোমেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু। জানাগেছে, বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিজ পদে থাকাকালীন সময়ে অর্থ দফতরে প্রভাব খাটিয়ে উচ্চতর স্কেল গ্রহণ, বেতনের সঙ্গে তারতম্যবিহীন অর্থ আয় ও নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে করপোরেশনের অর্থের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ের অভিযোগও রয়েছে।
অপরদিকে বাজার সুপারিনটেনডেন্ট মুহাম্মদ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিজ পদে কর্তব্যকালীন সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বরাদ্দবিহীন অনেক স্টল কর্তৃপক্ষের অগোচরে নিজ ইচ্ছায় জনসাধারণের কাছে ভাড়া দিয়ে ভাড়ার টাকা অবৈধভাবে গ্রহণ করে আত্মসাৎ এবং অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে স্টল বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট মো. আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বাজার সুপারিনটেনডেন্ট পদে থাকাকালীন সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া নিজ পদে (ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট) থাকাকালীন সহায়ক কর্মচারীকে দুর্নীতিতে উদ্বুদ্ধ করার নির্দেশ দেন মো. আজিজুর রহমান। পাশাপাশি ওই অবৈধ কাজ না করা হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়াসহ গ্রাহকের কাছ থেকে টানা এনে হয়রানিও করেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষ মনে করে এই তিনজনের কর্মকাণ্ডে সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি অনেকাংশে ক্ষুণ্নসহ আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়েছে। তাই তাদের তিনজনকেই চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বিধিমালার ৪৪(১) ধারা অনুযায়ী বরখাস্তকালীন সময়ে তিনজনেই খোরাকিভাতা প্রাপ্য হবেন।
এদিকে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ সূত্রে জানাগেছে, বরখাস্তের পাশাপাশি ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে না, সেই মর্মে পত্র প্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবর জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে সিটি করপোরেশনের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আহসান উদ্দিন রোমেল যিনি বর্তমানে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত রয়েছেন তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানাগেছে, মো. আহসান উদ্দিন রোমেল জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে কর্মরত না থেকে প্রশাসনিক শাখায় সংযুক্ত থাকলেও তথ্য গোপন রেখে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তথ্য কমিশনের শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্য ঢাকা যাওয়ার অফিস আদেশ স্বাক্ষর করিয়েছেন। যা কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে সম্প্রতি কেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন এবং সেই নোটিশের জবাব পত্র প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তা করেননি রোমেল।
এ অপরাধের কারণে কেন সাবেক এই জনসংযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার জবাবপত্র প্রাপ্তির ৩ কার্যদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply