সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন
আকতার ফারুক শাহিন॥ ত্রাণের চাল, ডাল, তেল, লবণ আর পেঁয়াজের সঙ্গে একটা করে তরমুজ পাচ্ছে দ্বীপ জেলা ভোলার দরিদ্র মানুষ। তরমুজ চাষীদের লোকসানের হাত থেকে বাঁচানো ও অসহায় মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এ তরমুজ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক। জেলার ৭ উপজেলার সবকটিতেই এ কার্যক্রম চলছে বলে জানান তিনি। তরমুজের পাশাপাশি জেলায় অসহায় শিশুদের জন্য ত্রাণের সঙ্গে তরল দুধও দেয়া হচ্ছে এ জেলায়। শিশু আছে এমন পরিবারে মিল্ক ভিটার তরল দুধ দেয়ার কার্যক্রম জেলার সবক’টি উপজেলায় শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক।
১২ এপ্রিল ভোলার জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি ভোলা জেলায় থাকা তরমুজ চাষীদের সমস্যা নিয়ে কথা বলেন ডিসি মাসুদ আলম সিদ্দিক। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে দেয়া নির্দেশনায় ভোলা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ পাঠাতে যেন কোনো জটিলতা না হয় তার ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ডিসি মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, ভিডিও কনফারেন্স শেষে আমাকে ফোন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কল্লোল।
তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে চাষীদের কাছ থেকে তরমুজ কিনে অসহায় দরিদ্র ও করোনার কারণে কর্মহীন মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে বলেন। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর সোমবার পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে ত্রাণের চাল, ডাল, পেঁয়াজ, লবণ আলু এবং তেলের পাশাপাশি দেয়া হয়েছে পরিবারপ্রতি একটি করে তরমুজ। ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখান) আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের তহবিলে সহায়তার পাশাপাশি আমরা নিজস্ব উদ্যোগেও কৃষকদের কাছ থেকে তরমুজ কিনে অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করছি। এতে করে দরিদ্র মানুষ দারুণ খুশি। জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও পরিবহন সংকটে চরম হতাশায় থাকা জেলার কৃষকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগে এখন আশার আলো দেখছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তজুমদ্দিন উপজেলার বাসিন্দা তরমুজ চাষী খালেক ব্যাপারি বলেন, আমার কাছ থেকেও তরমুজ নিচ্ছে প্রশাসনের লোকজন।
৩ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। প্রথম দিকে তরমুজ বাইরে পাঠাতে না পারায় অনেক লোকসান হয়েছে। দালাল ফড়িয়ারা অনেক কম দামে তরমুজ নিয়ে যেত। লোকসান হলেও কিছু বলার থাকত না। কেননা ক্ষেতে থাকলে তরমুজ পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এখন একদিকে যেমন তরমুজ বাইরে পাঠাতে পারছি তেমনি সরকারের লোকজন তরমুজ কিনে নেয়ায় আর সমস্যা হচ্ছে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শত কিংবা হাজার হিসেবে তরমুজ নিচ্ছে সরকার। দামও ভালোই পাচ্ছি। যে দাম চাই তারা (প্রশাসন) তাই-ই দিচ্ছে। এখন আর আমার লোকসানের ভয় নেই।
Leave a Reply