করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে নারীসহ চারজনের মৃত্যু Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে নারীসহ চারজনের মৃত্যু

করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে নারীসহ চারজনের মৃত্যু




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক নারীসহ দুজন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক যুবক ও মানিকগঞ্জে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক গৃহবধূ মারা গেছেন। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে থাকা এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তবে তিনি যক্ষ্মা রোগী ছিলেন। পূর্বপশ্চিমের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

বরিশাল: করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজনের মধ্যে একজনের শনিবার মধ্যরাতে এবং অপরজনের রোববার সকালে মৃত্যু হয়েছে। সাড়ে ৭ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনা ইউনিটে দুই রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকেরাও উদ্বিগ্ন।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ৪৫ বছর বয়সী এক পুরুষ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি পটুয়াখালীর সদর উপজেলার গোহানগাছিয়া গ্রামে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রেফার করার পর শনিবার সন্ধ্যায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে প্রথমে মেডিসিন ইউনিটে নেয়া হলেও পরে রাতেই করোনা ইউনিটে স্থানান্তর করা হয় এবং রোববার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, আমাদের এখানে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কোনো কিট নেই। তবুও রোগীর লক্ষণ দেখে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এই রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

মারা যাওয়া ব্যক্তির শ্বশুর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তার জামাতা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন।

এদিকে শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শনিবার দিবাগত রাতে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে নিরু বেগম (৪৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি বরিশাল নগরীর কাউনিয়া পুড়ানপাড়া এলাকার মো. দুলালের স্ত্রী।

হাসপাতালের এক মুখপাত্র জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটের দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। এর মাত্র ১৫ মিনিট আগে ওই রোগীকে শেবাচিম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, রোগীর স্বজনদের কাছে উপসর্গগুলো শুনে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে করোনা ইউনিটে পাঠিয়েছিলেন। করোনা ইউনিটে নেয়ার সাথে সাথে ওই নারীর মৃত্যু হয়। হাসপাতালে মারা যাওয়ার পরপরই স্বজনরা তার মৃতদেহ বাসায় নিয়ে যান।

মৃত ব্যক্তির স্বজনদের বরাতে তিনি আরও বলেন, এই রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনদিন আগে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরে বাড়িতে গিয়ে জ্বর, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে শনিবার রাতে শেবাচিমে নেয়া হয়। তার ডায়বেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ ছিল বলেও জানিয়েছেন স্বজনরা।

এছাড়া নিরু বেগমের কোনো স্বজন বিদেশ থেকে আসেননি কিংবা তিনিও বরিশালের বাইরে কোথাও যাননি বলে স্বজনদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।

প্রসঙ্গত, শনিবার দিবাগত রাত পর্যন্ত শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে পাঁচজন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী: করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় নিজ বাড়িতে রাখতে পারেনি গ্রামবাসীদের বাধায়। হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসা করালেন না চিকিৎসকরা। এক এক করে চারটি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পেলেন না। শেষ পর্যন্ত এক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহযোগিতায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিলেও ছেলেকে বাঁচাতে পারেনি এক বাবা। শনিবার রাতে আল আমিন (২২) নামের ওই যুবক রামেক হাসপাতালে মারা যান।

মৃত আল আমিন নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার অলংকার দিঘি গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে।

ছেলেটির বাবা মোখলেসুর রহমান জানান, আল আমিন নারায়ণগঞ্জে একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। শনিবার সকালে প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতে ফিরলে গ্রামের লোকেরা তাকে গ্রামে রাখতে বাধা দেন। পরে তাকে দ্রুত নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা আল আমিনকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেন ও ফেরত পাঠান।

পরে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও তাকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করা হয়। পরে রানীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুনকে জানালে তার হস্তক্ষেপে আল আমিনকে প্রথমে রানীনগর উপজেলা হাসপাতালে ও পরে আবার নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বিকালে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা আল আমিনকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, আল আমিনের লাশ রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তবে আল আমিন করোনায় নয়, মস্তিস্কের সংক্রমণ বা মেনিনজাইটিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ভর্তির সময় তার শরীরে জ্বরের মাত্রা তীব্র ছিল। মাথা ব্যাথা ও গলা ব্যথা ছিল।’

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সুচিত্রা সরকার (২৬) নামে এক নারীর মৃত্যুর পর তার পরিবারকে লাকডাউনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মৃত গৃহবধূ সুচিত্রা সরকার হরিরামপুর উপজেলার বলড়া ইউনিয়নের বড়ইছড়া গ্রামের মুদি দোকানদার নিতাই সরকারের স্ত্রী।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।’

স্বজনদের বরাত দিয়ে মনিরুজ্জামান আরও বলেন, সুচিত্রা সরকার গত ৭দিন ধরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট এবং দুদিন ধরে ডায়রিয়ায় ভুগছিলেন।

এক সপ্তাহ আগে ওই নারীর শ্বশুর মারা যান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শ্বশুরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অনেক লোক সমাগম হয়েছিল। সেখানে আসা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা- তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করা হযেছে। দ্রততম সময়ের মধ্যে তা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হবে।’

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য এবং তাদের নিকটতম প্রতিবেশীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসাথে হাসপাতালকে বিশেষ নজরদারিতে এবং রোগীর সংস্পর্শে আশা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হযেছে।’

পরীক্ষায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত হলে, নিহত নারীর গ্রামকেই লকডাউন করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক ফেরদৌস।

খুলনা: খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে থাকা সুলতান শেখ (৭০) নামে এক ব্যক্তির রোববার সকালে মৃত্যু হয়েছে। নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার আব্দুল গফুর শেখের ছেলে সুলতান গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ইনচার্জ ডা. শৈলেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, সুলতান শেখের করোনা ইউনিটে ভর্তি থাকলেও তিনি যক্ষ্মার রোগী ছিলেন। বিষয়টি ঢাকায় আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, তারা জানিয়েছে তার নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। সে কারণে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদও জানিয়েছন, মৃত সুলতান শেখ যক্ষ্মা রোগী ছিলেন।

প্রসঙ্গত, এর আগেও খুমেক হাসপাতালে মুস্তাহিদুর রহমান নামে এক রোগী মারা যান। তার করোনা উপসর্গ থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক রোগী হাসপাতাল ত্যাগ করে। কিন্তু পরবর্তীতে নমুনা পরীক্ষায় তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না বলে জানা যায়।

গত দুদিনে বাংলাদেশে নতুন করে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হয়নি বলে রোববার নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এর ফলে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ অপরিবর্তিত হয়েছে।

সংস্থাটির পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হয়নি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০৯ নমুনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ ফল পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত মোট ১৫ জন সুস্থ হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকও এসময় সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে সরকার। এর আগে শনিবার দেশে নতুন করে কোনো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD