শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
আরিফ হোসেন ॥ ভৌগলিক অবস্থানের কারনে বাংলাদেশের জলবায়ুর অবস্থা দিনদিন খুব ভয়াবহ হতে চলেছে। ফলে দেশে গত কয়েক বছর ধরে সিডর (২০০৭), আইলা (২০০৯), নারগিস(২০১০) এবং মহাসেন (২০১৩) এর মত ঘূর্নিঝড় ও বন্যা দেখা দিচ্ছে এবং ক্রমান্বয়ে তা বাড়তে থাকবে। ধারনা করা হয় সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাসমূহ ২০৫০ সালের মধ্যে লবনাক্ত পানির নিচে চলে যাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারনে ফসলের উৎপাদন কমে যাবে প্রায় ৩০%। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে কৃষি জমির পরিমান দিনদিন কমে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার দাতা সংস্থা অঈওঅজ এবং বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনাবিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালীবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি সুরক্ষা সেবাদানকারী সংগঠন, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন, ইন্টারন্যাশনাল ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন ও মারডক বিশ্ববিদ্যালয় অস্ট্রেলিয়া এর যৌথ উদ্যোগে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল ২০১৮ সালের প্রথম হতে ধানসহ অন্যান্য ফসলের পরিমিত মাত্রায় সার ব্যবস্থপনার উপরএকটি প্রকল্প(ঘটগঅঘ) বা¯তবায়ন করছে। প্রকল্পে অন্যতম উদ্দেশ্য হল ফসল আবাদে জমিতে পরিমিত ও লাভজনক মাত্রায় সুষম সার প্রয়োগ/ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা, জমির মাটি পরীক্ষা করে ফসল ভিত্তিক সার সুপারিশমালা ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহী ও অভ্যস্তকরা,মাটিপরীক্ষার কিট সহজলভ্য ও মাটিপরীক্ষার সেবা কৃষকের দারগোড়ায় পৌছে দেয়া, স্থানীয়পর্যায়ে কৃষকদেরসং গঠিত করে মৌসুম ভিত্তিক ফসল/জাতনির্বাচনকরে গ্রুপ ভিত্তিক ফসলআবাদ ও পরিচর্যাকর্মকান্ড পরিচালনাকরা, সর্বোপরি ফসল আবাদে নিবিড়তা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষকের আর্থ-সামাজিকউন্নতিসাধনকরা। ঘটগঅঘ প্রকল্পের অধীনে ২০১৮ সালের মে মাসে আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামের কৃষক সংগঠিত করে সেকান্দার খালী কৃষক দল গঠনকরা হয় এর পর ঐ দলের মাধ্যমে বিগত ১৩ জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে অত্র এলাকায় প্রথমবারের মত আমন ধান আবাদ ও সুষম সার ব্যবস্থাপনার উপর ৬ জন কৃষকের ৬বিঘা জমিতে প্রদর্শণী স্থাপনকরা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে নিউম্যান প্রকল্প আমন ধান আবাদে সুষম সার ব্যবস্থাপনার সুফল এর উপর মাঠ দিবস, ফসলকর্তন ও কৃষদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় (স্থান-চারঘাট কৃষক দলেরমাঠ, সেকান্দারখালী,আমতলী, বরগুনা)।
উক্ত মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে আমতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রাসেল এর সভাপতিত্ব্ েপ্রধান অতিথী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মোঃ আসাদুল হক, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ, পটুয়াখালীবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ অতিথী ছিলেন ড. মোঃ এনামুল হক, প্রকল্প সম্বন্বয়কারী, নিউম্যানপ্রকল্প, মারডক বিশ্ববিদ্যালয়,অস্ট্রেলিয়া;রাশেদ খান মেনন ফিল্ড ম্যানেজার, নিউম্যান প্রকল্প, মারডক বিশ্ববিদ্যালয়,অস্ট্রেলিয়া;মোঃ সাইফুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষিঅফিসার, ব্লক- সেকান্দারখালী,উপজেলা কৃষিঅফিস, আমতলী। এসময় মোট ৬০ জন কৃষক ও কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।
মাঠের আমন ধান কর্তণকরে দেখা যায়, সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করায় প্রতিবিঘায় (৩৩ শতাংশে) ১৮ মণ হারে ধানের ফলন হয়েছে। যা অত্র এলাকার কৃষকের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সভায় উপস্থিত সকল কৃষকেরাই আগামী মৌসুমে নিজ উদ্যোগে আমন ধান আবাদে সার সুপারিশ মালা ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। নিউম্যান প্রকল্প এবং শাপলা কৃষি কøাবের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামীতে অত্র এলাকায় আমন ধান আবাদে সুষম সার সুপারিশমালা ব্যবহার উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাবে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পথকে সুগম করবে।
Leave a Reply