বরিশালে খেজুরের রসে আঁকাল! Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




বরিশালে খেজুরের রসে আঁকাল!

বরিশালে খেজুরের রসে আঁকাল!




খোকন হাওলাদার, বরিশালঃ বরিশালে শীতের আগমনী বার্তা পৌঁছে গেছে কয়েক সপ্তাহ আগেই। এরইমধ্যে খেঁজুরগাছ থেকে মধুরস সংগ্রহ শুরু হয়েছে গ্রামে গ্রামে। শীতে ঐহিত্যের প্রতীক হিসেবে খেঁজুর রস ঘিরে গ্রামীণ জনপদে শুরু হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। রসের পাশাপাশি বরিশালের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে খেঁজুর গুড়ের পাটালি। গুড়ের গন্ধে ভরপুর হাটবাজারগুলো। এ রস ও গুড় দিয়ে পাড়া-মহল্লায় তৈরি হচ্ছে নানা প্রকার পিঠাপায়েস।

বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দুর্লভ খেজুরের রস পাওয়া যেন খুবই দুস্কর। প্রতি হাড়ি রস ১শ থেকে ১শ ৫০টাকা পর্যন্ত দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে । তবুও বছরের ঐতিহ্য হিসেবে গ্রাম গঞ্জের মানুষেরা রস সংগ্রহ করে পারিবারিক পিঠা উৎসব করে থাকেন। খেজুরের কাচা রস, গুড়, পাটালী, পিঠা পায়েস সহ নানান আইটেমের পসড়া সাজানো হয় এই শীত উৎসবে। তবে দুঃসাধ্য ও সামর্থের বাইরে হওয়ায় প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্বেও নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভুলতে বসেছেন খজুরের রস ও রসের স্বাদ।

শীতের মওসুম এলেই খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত থাকতেন গাছিরা। রসের পিঠাপুলি আর পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ে যেত গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ক্রমবর্ধমান মানুষের বাড়িঘর নির্মাণ আর ইট ভাটায় লাকড়ি হিসেবে ববহৃত হওয়ায় নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে ক্রমেই খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গেছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। কয়েক বছর পূর্বেও শীতকালে এসব এলাকার গাছিরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহে খুবই ব্যস্ত সময় কাটাছেন।

এছাড়া বাড়িতে গুড় তৈরি করি। প্রতিকেজি পাটালি গুড়ের মূল্য রাখা হয় ১৫০-২০০ টাকা। আর এক ঠিলা (ভাড়) রস বিক্রি করি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে।

তারা খেজুরের রস ও পাটালী গুড় বিক্রি করে বিপুল অংকের টাকা আয় করতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে গত কয়েক বছর ধরে তা ক্রমশ বিলুপ্ত হতে বসেছে। খেজুর রস দিয়ে শীত মৌসুমে পিঠা ও পায়েস তৈরির প্রচলন থাকলেও বরিশালে শীতকালীন খেজুর গাছের রস এখন দু®প্রপ্য হয়ে পড়েছে। বরিশালের বিভিন্ন আঞ্চলে ঘুরেও খেজুরের রসের সন্ধান মিলছেনা যৎসামান্য পাওয়া যায় তাও যেন সোনার দামে কিনতে হয়। কোন কোন এলাকায় খেজুর গাছ প্রায় বিলিন হওয়ার পথে।

নতুন করে কেউ এই গাছ রোপন না করায় এবং পুরোনো গাছের কোন পরিচর্যা না করায় এই প্রাজাতির গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। আবার কোন কোন এলাকায় খেজুর গাছ থাকলেও তা কাটা হয়না। গাছিরা আর আগের মত আগ্রহ ভরে গাছ কাটেন না। গাছ কাটতে যে পরিমান পরিশ্রম হয় সে পরিমান ফলাফল না হওয়াই এর অন্যতম কারন। আবার অনেক গাছে আগের মত পর্যাপ্ত রস না হওয়ায় অযথা এই কস্ট করতে রাজী নয় গাছিরা। অযতœ আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরগাছ গুলো যেন অভিমানে তার রস দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, বরিশালের কিছু কিছু এলাকায় এক শ্রেণির অসাধু ইটভাটার ব্যবসায়ীরা জ্বালানি হিসেবে খেজুর গাছ ব্যবহার করার কারণে ক্রমেই কমে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শীত পড়ার শুরুতেই বরিশালের সর্বত্র পোশাদার খেজুর গাছির চরম সঙ্কট পড়ে। তারপরেও কয়েকটি এলাকায় শখের বশে গাছিরা নামেমাত্র খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করছেন। ইতোমধ্যে ওইসব গাছিরা সকাল-বিকেল দুইবেলা রস সংগ্রহ করছেন। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী এ খেজুর রসের উৎপাদন বাড়াতে হলে টিকিয়ে রাখতে হবে খেজুর গাছের অস্তিত্ব। আর সেজন্য যথাযথভাবে পরিবেশ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ইটভাটাসহ যেকোনো বৃক্ষ নিধনকারীদের হাত থেকে খেজুর গাছ রক্ষা করতে হবে। সূত্রে আরো জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ থেকেও কৃষকদের খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পার্শ্বের পরিত্যক্ত স্থানে কৃষকরা পর্যাপ্ত পরিমাণ খেজুর গাছ রোপণ করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। খেজুর গাছ লাগানো, পরিচর্যা করা ও রস এর যথাযথ ব্যবহারে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হয়তো ধরে রাখা সম্ভব এই ঐতিহ্য। নয়তো এক সময় শুধু রূপকথার গল্পের মতই পরবর্তি প্রজন্মের কাছে খেজুরের রসকে উপস্থাপন করতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD