শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ “সু-সময়ের বন্ধু বটে অনেকেই হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়” অনন্তকাল ধরে এমন একটি প্রবাদ চালু আছে। আর এই প্রবাদের সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য হয় যখন কোন নির্বাচন ঘনিয়ে আসে। এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই সকল সু-সময়ের বন্ধুদের আনাগোনা বেড়ে গেছে বরিশালে। যদিও ক্ষমতাবিহীন দলের অসময়ে এদের খুঁজে পাওয়া যায়না। এরা এতই চতুর যে নির্বাচন এলে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের তৈলমর্দনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অবশ্য প্রকারান্তরে ওই নেতার বিরোধী শক্তির সাথে আতাঁত করে প্রভাবহীন নেতার কাতারে দাড় করার অপচেষ্টা করে প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। আর এসব ক্ষেত্রে বরিশালে প্রায়ই উঠে আসে এসপি মাহাবুব এর নাম। যার অতীত ঘাটলে এরকম হাজারো উদাহরণ দিতে পারবেন বরিশালের সাধারণ মানুষ। যে কিনা আগামী সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন।সূত্র মতে, নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পরের দিন আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ফরম বিতরণ ও জমা কার্যক্রম শুরু হয়। অতীতে কোন নির্বাচনে জয়লাভের কৃতিত্ব না থাকলেও প্রতিবারের মতো এবারও দলীয় টিকিট পেতে মনোনয়ন চাচ্ছেন এসপি মাহাবুব। যদিও আ’লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুড লিস্টে অপেক্ষাকৃত তরুন রাজনীতিবিদ কয়েকজনের নাম রয়েছে বলে জানা যায়। তথাপি মনোনয়ন যে কেউ চাইতে পারে। তাই বলে একজন সুবিধাবাদী যার নামে রমনা থানায় হত্যা মামলার আসামী এসপি মাহাবুব বর্তমান জনপ্রিয় সরকার আ’লীগের মনোনয়ন চাওয়ায় বিএনপির ঘাঁটি খ্যাত বরিশালের মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীরাও হতাশ।সূত্র বলছে ঢাকা বামনা থানায় ২০০৬ সালের জানুয়ারির মাসের ৫ তারিখে এসপি মাহাবুবের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং (২৯)। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলক নামায় উল্লেখ ছিলো মৃত আলতাফ উদ্দিন আহমেদ এর পুত্র মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ, বাড়ি উত্তর ঢাকায় রোড নাম্বার (০৯) সেক্টর নং (০৪) বাড়ির নং (৩৭)। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকায় ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পাননি তিনি। দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেসময় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন চালিয়ে যান। ক্ষমতাসীন দলের মরহুম শওকত হোসেন হিরন বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন। অভিযোগ রয়েছে বছরের পর বছর ঢাকায় অবস্থান করা এই নেতার সাথে বিএনপির বরিশাল মহানগর সভাপতি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে মাহাবুবের। আর এ কারণেই আ’লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে তার সম্পর্ক কখনোই ভাল হয়নি।
অপরদিকে আ’লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা যখন তরুন ও যোগ্য নেতাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখছে আগামী সংসদ নির্বাচন বরিশাল সদর আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে। ঠিক সেই মুহুর্তে একজন হত্যা মামলার আসামী দলীয় মনোনয়ন চাওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী বলেন, এসপি মাহাবুবকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে বরিশাল আ’লীগ। তবে নেতাকর্মীদের কাছে এসপি মাহাবুবের গুরুত্ব না থাকায় সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা। তারা বলেন, নির্বাচন শেষ হলে এসপি মাহাবুবকে কখনোই বরিশালের মাটিতে দেখা যায়না। তৃণমূলের দাবী সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য নেতাকে দলীয় মনোনয়ন না দিলে বর্তমান সরকার যতই জনপ্রিয় হোক বিএনপির ঘাঁটিতে জয়লাভ করা যাবেনা। কেননা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার হেভিওয়েট প্রার্থী। তাকে পরাজিত করতে হলে তৃণমূলের চাওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে কেন্দ্রের। যেমনটি দিয়েছিলেন বিগত সিটি নির্বাচনে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে।
Leave a Reply