কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম

কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম

কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম




কলাপাড়া প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। সাগর ও নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের অন্তত ১৩ গ্রাম তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পনিতে ডুবে থাকে বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়টুকু। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে প্রতিদিনই দুই দফা পানিতে প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে ফসলি জমিসহ মাছের ঘের। বন্ধ হয়ে গেছে কৃষকদের চাষাবাদ। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে এলাকার মানুষ। ওইসব গ্রামে অধিকাংশ মানুষ এখন অনেকটাই জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

 

 

এদিকে মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর পয়েন্টের বাঁধটি এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জোয়ারের পানির চাপে যেকোন সময় বাঁধটি ছুটে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হতে পাড়ে, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অমাবস্যার প্রভাবে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বানভাসী পরিবারগুলোর চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অস্বাভাবিক স্রোতের টানে মানুষ ভেসে বেড়ালেও তাদের আর্তনাদ কেউ শুনছে না। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সঙ্কট। এছাড়া এক গ্রাম থেকে অপর গ্রামের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এরপরও ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে কোনো উদ্যেগ নেয়নি কেউ।

 

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে লালুয়ার চারিপাড়া বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে চারিপাড়া, পশরবুনিয়া, ধঞ্জুপাড়া ও নয়াপাড়াসহ ১২ থেকে ১৩টি গ্রাম প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে ওইসব গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

 

 

ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই অপেক্ষাকৃত উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সঙ্কট। ফলে গরু কিংবা ছাগলের মালিকদের পড়েতে হয়েছে বিপাকে। এদিকে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর বাঁধটিও ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় জোয়ারের পানির চাপে যে কোন সময় বাঁধটি ছুটে কমরপুর, সুদিরপার, পুরান মহিপুর, ইউসুবপুর ও নিজামপুর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেছে স্থানীয়রা। এছাড়া দেবপুর বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।

 

 

নিজামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরজামান হাওলাদার বলেন, ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে ভেঙে যায় নিজামপুর ও সুদিরপুরের বেড়িবাঁধ। এরপর কয়েক দফা পনি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে বর্ষা মৌসুমে নির্মাণকাজ করে। কিন্তু টেকসই না হওয়ায় এ বাঁধটি ফের ভাঙন শুরু হয়েছে।

 

 

লালুয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামের পানিবন্ধি মানসুরা বেগম বলেন, ‘জোয়ার-ভাটায় পানি উইড্ডা সব ডুইব্বা গ্যাছে। নদীতে পানি বাড়লে আমাগো নাওয়া খাওয়া ঘুম হারাম হইয়া যায়। মোগো বিপদের কোন শেষ থাকে না।’ দু’দিন ধরে চুলায় হাড়ি দেয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

 

একই গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা মরিয়ম বিবি বলেন, প্রতিদিন পানি বাড়লে তার ছেলে, ছেলের বৌ ও দুই নাতিকে নিয়ে চৌকির ওপর বসে থাকতে হয়।

 

 

কৃষক ইসহাক হাওলাদার বলেন, লবণ পানিতে ক্ষেত-খামার তলিয়ে রয়েছে। চাষাবাদও বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে। বিশেষ করে অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমার জোয়ারের সময়ই এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।

 

 

লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, এ বাঁধের বিষয় নিয়ে একাধিবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমার জোয়ার হলেই এ ইউনিয়নের ১২/১৩টি গ্রামের মানুষ সবচেয়ে দুর্ভোগে থাকে। এসব মানুষের দুর্ভোগ লাগবে স্থায়ী বাঁধের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

 

এদিকে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন বলেন, নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক বছর না যেতেই নিজামপুর বাঁধের ভাঙন শুরু হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ ব্যয়বহুল বেড়িবাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব নয়। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধটি পুনর্নির্মাণের জন্য মন্ত্রী, এমপি ও পনি উন্নয়ন বের্ডের দপ্তরে দৌড়ঝাপ করতে করতে আমার মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। এরপরও কোন সুফল পাইনি। তাই এলাকার জনগণের স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (কলাপাড়া সার্কেল) খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান বলেন, লালুয়া ও মহিপুরের নিজামপুর বেড়িবাঁধের প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে জরুরিভিত্তিতে যদি কোন প্রকল্প দেয়া হয় তাহলে কাজ করা সম্ভব।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD