সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি ॥ আজ ৮ জুলাই বুধবার এমভি নাসরিন-১ ট্র্যাজেডির ১৭ বছর। এদিন ডাকাতিয়া নদীতে লঞ্চ ডুবিতে ৪০২ জনের মৃত্যু হয়। এ উপলক্ষ্যে নিহতদের স্বজনদের পক্ষ থেকে দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জের পূর্ব চরউমেদ গ্রামের হাফিজ উদ্দীন বাজার সংলগ্ন আলহাজ মো: মুনছুর আহম্মদের ছেলে নিহত মো: জাহাঙ্গীর আলমের স্বজনরা এবং আজাহার রোডের নিহত আনিচল হক ও তার স্ত্রী আমেনা নাতনী কমেলা বেগমের স্বজনরা তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়ার আয়োজন করেন স্থানীয় জামে মসজিদে। সকল নিহতদের রূহের মাগফেরাতের জন্য দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের এই দিনে ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা ভোলার লালমোহনগামী এমভি নাসরিন-১ লঞ্চ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে ডুবে ৪০২ জনের সলিল সমাধি হয়। দেশে নৌ দুর্ঘটনার ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা।
নাসরিন লঞ্চডুবির ১৭ বছর পার হলেও নিহত পরিবারে কান্না আজো থামেনি। এক পরিবারের ২৬ জন নিয়ে বরযাত্রী হয়ে লঞ্চে উঠে ২৪ জনকেই হারায় লালমোহন ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের মহেষখালী গ্রামের রিনা বেগম।
রিনার সাথে বেঁচে আসে তার ফুফাতো ভাই সোহেল। চিরদিনের মতো হারিয়ে ফেলে রিনার সাত বছরের মেয়ে হাফসা, বোন স্বপ্না, রুমা, তাদের স্বামী-সন্তান, মামা আ: কাদের, মামি সুফিয়া, খালা রাহিমা, খালাতো ভাই মিলন, মিজানসহ পুরো পরিবারের স্বজন।
সে দিন রিনা ঢাকা থেকে কলেজ শিক্ষক ভাগ্নে মতিনের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য লালমোহনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। পরিবারের কোনো সদস্যেরই মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নাসরিন লঞ্চে সেদিন এশার নামাজের ইমামতি করেছিলেন লালমোহন চরভূতাই উনিয়নের মাদরাসা সুপার মাওলানা মাকসুদুর রহমান। নিজে বেঁচে আসতে পারলেও সাথে থাকা ভাগ্নে নোমানকে আর খুঁজে পাননি। নিজের স্বামীকে হারানোর কথা তুলে ধরেন শামসুন নাহার। স্ত্রী ও মেয়েকে হারিয়ে বেঁচে ফিরে আসার কথা জানান লালমোহনের ব্যবসায়ী মো: শাহজাহান।
রমাগঞ্জের ৮নং ওয়ার্ডের পূর্বচরউমেদ গ্রামের আজাহার রোড এলাকার আনিচল হক তার স্ত্রী আমেনা বেগম, নাতনী জেসমিন আক্তার (কমেলা) ওই লঞ্চে উঠে আর ফিরে আসেনি বাড়িতে।
তাদের সন্তান প্রতিবন্ধী সিরাজ, কাঞ্চন মিয়া, ভূট্টো জানান, তারা তাদের মা বাবা ও ভাগনীকে অনেক খোঁজ করেছেন, কিন্তু তাদের মৃতদেহগুলো কোথাও পায়নি। প্রতিবছর এ দিনে তারা তাদের মাবাবার জন্য মসজিদে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন।
স্বজনহারাদের দায়ের করা মামলায় উচ্চ আদালত ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানান প্রতিবন্ধী সিরাজ। এ রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চান নিহত ও নিখোঁজ পরিবারের স্বজনরা।
Leave a Reply