বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ আজ শনিবার ২০ জুলাই সকালে ঢাকা থেকে আসা সুরভী-৮ লঞ্চের স্টাফ কেবিনে গার্মেন্টসকর্মী আঁখি আক্তারকে হত্যার অভিযোগে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় নিহত আঁখির পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার সুষ্ট তদন্তের সার্থে সুরভী-৮ লঞ্চের যেই স্টাফ কেবিন ভাড়া দিয়েছিলো সেই স্টাফকে আসামী সনাক্ত করার জন্য থানায় নিয়ে যায়। এমন সময় লঞ্চ শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পরে যে তাকে আটক করা হয়েছে।
এসমন সংবাদের ভিত্তিতে লঞ্চ ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিকরা। অবশেষে শ্রমিকদের তোপের মুখে লঞ্চ শ্রমিককে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এর পরে সর্বশেষ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকার লঞ্চ বরিশাল ঘাট ত্যাগ করেন।উল্লেখ্য যে, বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করা এমভি সুরভী-৮ লঞ্চের নিচতলার স্টাফ কেবিন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে।
মৃত নারী নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী নগরের আদমজী ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপেয়ারেল্স লিমিটেডের একজন অপারেটর ও বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশিবপুরের বড়পুইয়াউটা এলাকার বজলু বেপারির মেয়ে আঁখি আক্তার (২৯)।
ওই নারীর বাবা বজলু বেপারি জানান, আঁখির সঙ্গে আদমজী নগরের এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ বছরের এক মেয়েও আছে। তাদের দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপড়েনে সেই সন্তান নানাবাড়ি বাকেরগঞ্জেই থাকে।
তিনি জানান, গ্রামের বাড়িতে ভোটার কার্ডের কাজের জন্য আসার কথা ছিল মেয়ে আঁখির। শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিনগত রাতে এমভি সুরভী-৮ লঞ্চে করে ঢাকার সদরঘাট থেকে আঁখি বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় সে একাই থাকার বিষয়টি তিনি জানতেন। লঞ্চে ওঠার সময় একবার কথা হলেও পরবর্তীতে আর কথা হয়নি। সকালে সে যথাসময়ে বাড়িতে না এলে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে আঁখির সন্ধানে নামেন স্বজনরা। পরে বরিশাল লঞ্চঘাটে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন লঞ্চের স্টাফ কেবিন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সুরভী-৮ লঞ্চের সুপারভাইজার মেজবাহ উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে লঞ্চের নিচতলার স্টাফ (লস্কর) কেবিনে ওঠেন আঁখি আক্তার। এসময় তার সঙ্গী ছিলেন এক যুবক। রাতে ওই দু’জন দু’টি ডেক টিকিটও সংগ্রহ করেন। কিন্তু শনিবার সকালে লঞ্চ ঘাটে পৌঁছালে স্টাফরা ওই কেবিনে গিয়ে আঁখিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পাশাপাশি তার সঙ্গী ওই যুবকের সন্ধান লঞ্চে না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ও স্বজনদের খবর দিলে তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে সুরতহাল প্রতিবেদন করতে গিয়ে আঁখি আক্তার নামে ওই গার্মেন্টস কর্মীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আলমত পাওয়া গেছে। তবে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও মেডিক্যাল পরীক্ষা ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।তিনি আরও জানান, আঁখির সঙ্গে থাকা যুবকের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে, লঞ্চের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহ করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত ওই যুবককে আইনের আওতায় আনা ও মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন হবে।
Leave a Reply