সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “নতুন বাংলাদেশের পথে আমরা যাচ্ছি। এ যাত্রার প্রধান ভিত্তি হবে একটি শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, সর্বাঙ্গসুন্দর নির্বাচন।”
তিনি উল্লেখ করেন, আসন্ন নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য একটি মাইলফলক। এজন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান— তারা যেন পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, “সদাচরণ, দক্ষতা এবং নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই জনগণের আস্থা আরো সুদৃঢ় হবে।”
২০২৪ সালের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান ও চলমান জাতীয় পুনর্গঠন কার্যক্রমে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, বাহিনী দেশের দুর্যোগ মোকাবিলা, অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, জরুরি সেবা প্রদান— প্রতিটি ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, “ফ্যাসিস্ট আমলে আমাদের বাহিনীর পেশাগত উন্নয়ন উপেক্ষিত ছিল।” তবে বর্তমানে বাহিনীর আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি সংযোজন ও দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও যুবসমাজকে দেশরক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে বিএনসির কার্যক্রম বহু গুণ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্তকে তিনি সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন।
সশস্ত্র বাহিনীর ১৯৭১ সালের বীরত্বগাথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই বাহিনীর জন্ম রণক্ষেত্রে। ২১ নভেম্বর তিন বাহিনীর সম্মিলিত অভিযানে মুক্তিযুদ্ধ নতুন গতি পেয়েছিল, যার ফলাফল হিসেবে আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।” তিনি জানান, ইতিহাসে এই ত্যাগ স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ৩৭ বছরে ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশন সম্পন্ন করা হয়েছে এবং বর্তমানে ১০টি মিশনে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করছে। তিনি নারী শান্তিরক্ষীদের অবদানকেও গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।
শেষে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও তাদের পরিবারের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে তিনি বলেন, “দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নতির জন্য সামরিক-বেসামরিক সকলের ঐক্য অপরিহার্য।”
Leave a Reply