শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
কাওসার মাহমুদ মুন্না ॥
ভূলে ভরা নগরীর মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট। এ যেন দেখার কেউ নেই। সূত্র জানায়, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) স্বরসতি (৮০) নামের এক রোগী পেটে ব্যাথা নিয়ে নগরীর প্রান কেন্দ্র সদর রোডস্থ প্যারারা রোডে অবস্থিত মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ এইচ এন সরকারের কাছে চিকিৎসা নিতে যায়। চিকিৎসক রোগ নির্নয় করার জন্য অনেক গুলো পরীক্ষা ধরিয়ে দেয়। পরীক্ষায় ধরা পরে স্বরসতির রক্ত শুন্যতা। রোগীর শরীরে রক্ত পুশ করানোর জন্য চিকিৎসক রক্ত গ্রুপিং এন্ড ক্রোস মেচিং নামের একটি পরীক্ষা দেন। রক্তের গ্রুপ ঐ প্রতিষ্ঠানে করালে পরীক্ষায় রক্তের গ্রুপের ফলাফল ‘ও’ পজেটিভ আসে। কিন্তু রোগীর স্বজনরা রক্তের গ্রুপ নিয়ে সংকোচে পরে যায়। তারা পূনরায় সেখানে রক্ত পরীক্ষা করালে রিপোর্টে রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজেটিভ আসে। স্বজনরা বিপাকে পরে যায়। রোগীর শরীরে রক্ত পুশ করানোর জন্য শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং সেই পরীক্ষা পূনরায় হাসপাতালে করায়। সেখানে রক্ত গ্রুপিং এন্ড ক্রোস মেচিং করালে সেখানে স্বরসতির রক্ত গুপ ‘বি’ পজেটিভ আসে। এতে তারা আরো হতাসায় পরে যায়।
পরে ঐ রিপোর্ট নিয়ে মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের যায়। সে খানে জহর লাল সরকার রোগীর স্বজনদের উল্টা পাল্টা বুজিয়ে পাঠিয়ে দেয়। তারা ৪র্থ বার শেবাচিম হাসপাতালে রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে পূনুরায় রক্ত ঐ পরীক্ষা করালে সেখানে রক্ত গ্রুপ ‘বি’ পজেটিভ আসে। এর মানে হাসপাতালের পরীক্ষার রিপোর্ট সঠিক বলে তাদের মনে হয়। কিন্তু সেই মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রিপোর্ট ভূল। এ রকম ভূল রিপোর্টের কারনে রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারে। রোগীর রোগ নির্নয়ের জন্য চিকিৎকরা পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। আর পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে রোগীর চিকিৎসা দেন। সেখানে তো অবশ্যই চিকিৎসক ভূল রিপোর্ট দেখে ভূল চিকিৎসা দিবেন। অনেক সময় এই ভূল রিপোর্টের কারনে রোগীরা হতাসায় মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে। আবার অনেক সময় তারা অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। এরকমই চিকিৎসক ভূল রিপোর্ট দেখে স্বরসতিকে ভূল চিকিৎসা দিতো। আর ভূল চিকিৎসার জন্য রোগীর অকালে মৃত্যু হতে পারতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জানায়, ঐ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে অতিরিক্ত পরীক্ষা দিয়ে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জহর লাল। অদক্ষ টেকনিশিয়ানের কারনে ঐ প্রতিষ্ঠানে অহরহ ভূল রিপোর্ট হচ্ছে । আর এযেন দেখার কেউ নেই।
এ ব্যাপারে ঐ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহর লাল সরকার ঘটনা সত্যতা সিকার করে বলেন, ভূল হতেই পারে ডাক্তাররাও মানুষ তারাতো অমানুষ না । চিকিৎকরা ও কম্পিউটার অপারেটর ভূল করছে আমার তো কোন ভূল নাই। ডাক্তাররা কি করে না করে সেটা দেখার কি মালিকের দায়িত্ব। আর স¦রসতি আমার আতœীয় সেখানে ভূল হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু স্বরসতি পরিবার জানায়, জহর লাল আমাদের কোন আতœীয় নয়। কিন্তু ঐ প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীর আতœীয় তিনি। পরিচালক জহর লাল সরকারের কথা শুনে মনে হলো সে যেমন অদক্ষ তেমনি তার অদক্ষ প্রতিষ্ঠানের অদক্ষ টেকনিসিয়ানরা। সূত্র জানায়, মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ২৪০ জন পোষাকৃত দালাল রয়েছে। এরা শহরের বিভিন্ন স্থানে ওৎপেতে থেকে রোগীদের ফুসলিয়ে নিয়ে আসে ঐ প্রতিষ্ঠানে। বিনিময়ে তারা পেয়ে থাকে মোটা অংকের কমিশন ।
এ ব্যপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, অবশ্যই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যপারে ডাঃ মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, অবশ্যই ঐ সকল টেকনিসিয়ানদের কে মালিক পক্ষের তদারকি করা উচিৎ , তারা দক্ষ না অদক্ষ। তবে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply