বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥ কুয়াকাটা পৌরসভার একমাত্র খালটির দুই পাড় দখল করে স্থাপনা তোলার কাজ কিছুতেই থামছে না। এমনকি কুয়াকাটা পৌরসভার ভবন তোলার কাজে খালটির পাড় দেয়াল করে দখল করা হয়েছে। কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার পৌরশহরের পানি নিষ্কাশন হয় এ খালটি দিয়ে। কচ্ছপখালীর দীর্ঘ খালটির একটি শাখা পৌরশহরের ঘাটলা থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত রয়েছে।
খালটির দুই পাড় দেদারছে ভরাট করে নেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ পাইলিং করে দেয়াল পর্যন্ত তুলেছে। খালটিতে পারিবারিক এবং আবাসিক হোটেলের বর্জ্যে একাকার হয়ে আছে। কয়েকবছর আগে ঘাটলা স্পটে খাল ঘেষে মাছ-মুরগির একটি বাজার করতে গিয়ে খালের কিছু অংশসহ খাস জমি বালুু দিয়ে ভরাট হয়েছে। এরপরে ওই বাজারের সকল বর্জ্য খালটিতে ফেলা হয়। মার্কেট এলাকার অসংখ্য স্থাপনা খালের দুই পাড় দখল করে তোলা হয়েছে। করা হয়েছে দোকানপাট। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনা এবং ভূমি প্রশাসনের উদাসীনতায় এখন অত্যাবশ্যকীয় এখালটি অস্তিত্বসঙ্কটে পড়েছে।
দখলদারদের দৌরাত্ম কোন কিছুতেই থামছে না। সচেতন মানুষের অভিযোগ, পৌরসভার একমাত্র খালটি দখল-দূষণের কারণে মরে যাচ্ছে, তাতে কুয়াকাটার উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান ব্যাহতের শঙ্কা রয়েছে। দখল দৌরাত্ম এমন পর্যায় পৌছেছে যে ঘাটলার কালভার্ট সংলগ্ন খালটির মাঝখানে এবং পুরনো কালভার্টের ওপর স্থাপনা তোলা হয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ পটুয়াখালী বছরখানেক আগে কুয়াকাটায় উচ্ছেদ অভিযান চালায় যা ছিল নামকাওয়াস্তে। উচ্ছেদ অভিযানের পরে আবার যেই সেই অবস্থা। সড়ক-জনপদের জায়গা ফের দখল করে তোলা হয়েছে বাজারের দোকান পাট। যেখানে প্রয়োজনীয় খালটি রক্ষা পায়নি দখলদারের কবল থেকে। সম্প্রতি মহিপুর ভূমি অফিসের তহশিলদাররা খাস খালের স্থাপনা উচ্ছেদে লোক দেখানো অভিযান চালায়।
অভিযোগ রয়েছে এদের যোগসাজশে তাঁদের ম্যানেজ করেই প্রতিনিয়ত এসব স্থাপনা তোলার কাজ চলছে। যেখানে সরকার পর্যটন এলাকার উন্নয়নে বহুমুখি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সেখানে দুর্নীতিবাজ তহশিলদারদের কারণে খাল এবং খাস জমি বেহাত হচ্ছে। কুয়াকাটার নবীনপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ শহীদুল ইসলাম জানান, প্রায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালটি এখন দুই পাড়ের মানুষসহ পৌরবাসী ব্যবহার করতে পারে না। একদিকে একটি অংশে দখল-ভরাট করা হচ্ছে।
আর বড় একটি অংশে শত শত অবৈধ সুক্ষ ফাঁসের জাল দিয়ে এপাড়-ওপাড় আটকে মাছ ধরা হচ্ছে। একসময় খালটি দিয়ে ট্রলারসহ যানবাহন চলত। এখন কোন মানুষ একটি ঝাকি জাল মারতে পারেনা। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, খালটি রক্ষায় তিনি সজাগ রয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান জানান, খালের, নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের একটি তালিকা পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে।
Leave a Reply