মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। নিভৃত পল্লীতে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের ১১৮ নং কাঁঠালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হটাৎ করে দেয়ালে ফাঁটল ও ছাদ ধসের ঘটনা ঘটেছে। এ মাসের মধ্যে সপ্তাহে বিদ্যালয় চলাকালীন হটাৎ করে বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে পড়েতে দেখা গেছে। এতে কেউ আহত হয়নি বলে জানা গেছে। সে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী সহ অভিভাবকরা উৎকন্ঠায় রয়েছেন। বিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষক প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে ক্লাস করছেন। ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম ।
সরেজমিনে গিয়ে ও স্কুল সুত্রে জানা গেছে, কাঁঠালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি নির্মানের ২০ বছরের মধ্যেই ঝুর্কিপুর্ণ হিসেবে ভবনটি জরাজীর্ণ ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে এ বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৯৪ জন।
শিক্ষার আলো প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে দেবার জন্য ১৯৮৮ সালে কাঁঠালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যারয় প্রতিষ্টা করা হয়। ১৯৯৯ সালে পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। এখন ভবনটি হয়ে পড়েছে ঝুকিঁপুর্ণ। বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন অংশের পলেস্তরা খসে পড়ছে। ছাদ ও বারান্দার পিলার গুলোর ঢালাই খসে রড বের হয়ে এসেছে। ছাদের কিছু অংশ ভেঙ্গে পড়েছে। সামনের দরজা জানালারও একই অবস্থা ।
ভবন দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এখন ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়েছে। এসব জরাজীর্ণ ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে নিভৃত পল্লী গ্রামের ছাত্রÑছাত্রীদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা দেয়া হয়েছে। জরাজীর্ণ এ ভবন ২০ বছর আগে নির্মিত হয়। একটু জোরে বাতাস হলেই ক্লাস ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা নিরাপদ স্থানে চলে যায়। সামান্য বৃষ্টি এলে ছাদ চুঁইয়ে পানিতে পুরো মেঝে ভিজে একাকার হয়ে যায়। দরজা-জানলা ভেঙ্গে গেছে।
ভবনের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে এবং ফলে যে কোনো সময় প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি ছাদের পলেস্তরা খসে বেশ ক’জন ছাত্রÑছাত্রী আহত হয়।
বিদ্যালয়ের ছাত্রÑছাত্রী আছাদুল ইসলাম (৫ম) ও সাদেকুর নাহার (৪র্থ) জানায়, আমরা ক্লাসে শিক্ষক ও বইয়ের দিকে যত না তাকাই তার চেয়ে বেশি তাকাই ছাদের দিকে। ক্লাসে বসলেই ছাদ থেকে বালু পড়ে জামাÑপ্যান্ট নষ্ট হয়ে যায়। খাতায় লিখতে শুরু করলে বালুকণা পড়ে কলম নষ্ট হয়ে যায়। আমাদেরকে বিদ্যালয়ে হাঁটতেও ভয় লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বলেন , ১৯৯৯ সালে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মান করে। তাদের অভিযোগ,ভবনটি নির্মাণে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় অল্প দিনের মধ্যে এটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। যার কারণে এই অবস্থা সন্তানদেরকে ঝুঁকির মধ্যে স্কুলে পাঠিয়ে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। অতি শীঘ্রই যেনো এই সমস্যার সমাধান করে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাা জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
ওই ইউনিয়নের কাঁঠালপাড়া, গাজীপাড়া, কাচিমখালী, চাওলাপাড়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা লাভের একমাত্র প্রতিষ্টান এ বিদ্যালয়।
কাঁঠালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির পর্ষদের সভাপতি মো.আ. জলিল হাওলাদার বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিদ্যালয়ে ভবনের ব্যাপারে আবেদন জানিয়েছি। তারা পরিদর্শনও করেছে। কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে, তার নিশ্চিত পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আইয়ুব আলী খাঁন বলেন এই বিদ্যালয়টি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক এবং প্রায় ৯৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি একটু জোরে বাতাস হলেই ক্লাস ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা নিরাপদ স্থানে চলে যায়। সামান্য বৃষ্টি এলে ছাদ চুঁইয়ে পানিতে পুরো মেঝে ভিজে একাকার হয়ে যায়। দরজা-জানলা ভেঙ্গে গেছে। ভবনের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে এবং ফলে যে কোনো সময় প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন। ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায়না।
কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.আবুল বাসার(দায়িত্বপ্রাপ্ত) বলেন, ইতিমধ্যেই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে এবং নতুন ভবন পাওয়ার জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুটি রুমে ক্লাস করার জন্য প্রধান শিক্ষককে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে দুটি রুম করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি উপ প্রকৌশলী মো.দেলোয়ার হোসেন বলেন,ওই বিদ্যালয় নতুন ভবন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে । তারা ভবন পাবে । আমরা পুর্বের ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করছি।
Leave a Reply