এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথের চাপেই মিন্নি গ্রেফতার ! Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথের চাপেই মিন্নি গ্রেফতার !

এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথের চাপেই মিন্নি গ্রেফতার !




বরগুনা প্রতিনিধি॥  বরগুনা শহরে দিনে-দুপুরে বহু মানুষের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা এখন দেশজুড়ে আলোচনার বিষয়।এই ঘটনার তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয় যখন হত্যাকাণ্ডের ২১ দিন পরে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার দিন যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন সেই মিন্নিকেই ফাঁসাতে তৎপর হয়ে ওঠেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ।

তার লোকজনই মিন্নির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের কুৎসা রটায়। মিন্নির গ্রেফতারে চাপ তৈরিতে সুনাম দেবনাথ নিজে উপস্থিত থেকে রিফাত শরীফের বাবাকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করান। আবার বরগুনার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধনে তিনি নিজেও মিন্নির গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সুনাম দেবনাথের এমন তৎপরতায়ই পুলিশ তদন্তের রূপরেখা তৈরি করে। মূল আসামিকে বাদ দিয়ে মামলার প্রধান সাক্ষীকে আসামি করতে তারা তৎপর হয়ে ওঠে। মিন্নির পক্ষে না দাঁড়াতে আইনজীবীদেরও চাপ দেন সুনাম দেবনাথ। রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড এবং মিন্নির গ্রেফতারের পর বরগুনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সুনাম দেবনাথ।

অভিযোগ, তিনি তার পিতার রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে মামলার তদন্তে নানা রকম প্রভাব খাটাচ্ছেন। তবে চাপের বিষয় মানতে নারাজ বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, কেউ চাপ দিচ্ছে না।চাপতো দূরে থাক কেউ মামলার বিষয়ে কোনো অনুরোধও করছে না।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রিফাত শরীফকে যারা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারা বরগুনা শহরে সংঘবদ্ধ অপরাধী হিসেবে পরিচিত। বরগুনা শহরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন নয়ন বন্ড এবং রিফাত ফরাজী। অসংখ্য ছিনতাইয়েরও অভিযোগ রয়েছে বন্ড-ফরাজীদের বিরুদ্ধে। মাদকের মামলায় তারা বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন।

হত্যাকাণ্ডের পর খুনিদের আশ্রয়দাতাদের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ঘটনার ১৮ দিন পরে যখন পুত্রবধূ মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন, তখন থেকে এই আলোচনা আড়ালে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়ে ক্ষান্ত হননি সুনাম দেবনাথ।

মিন্নির গ্রেফতারের দাবিতে নিজে মানববন্ধন করার সঙ্গে নিজের অনুসারীদের দিয়ে ফেসবুক এবং ইউটিউবে এ হত্যাকা কে নানাভাবে নারীঘটিত বিষয় হিসেবে প্রমাণের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের অভিযোগ, মেয়ের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানোর জন্য তিনি তিনজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাদের মধ্যে একজনকে তিনি টাকাও দেন। কিন্তু তাদের সবাই শেষ মুহূর্তে অপারগতা প্রকাশ করেন। সুনাম দেবনাথের তৎপরতার কারণেই রিমান্ড শুনানির দিন কোনো আইনজীবী আমার মেয়ের পক্ষে দাঁড়াননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনার একজন সিনিয়র আইনজীবী বলেন, মিন্নিকে যেদিন আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছিল সেদিন সুনামের লোকজন আইনজীবীদের বলে যায় কেউ যেন অহেতুক আদালতে ভিড় না করে। তখনই আমরা বুঝতে পারি ঘটনা কোন দিকে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনার একজন ব্যবসায়ী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নিহত রিফাত শরীফ ও তাকে হত্যাকারী সবাই সুনাম দেবনাথের লোক। তাই নিজের লোকদের বাঁচাতে তিনি মিন্নিকে দায়ী করার চেষ্টা করছেন। এমনিতেই থানার পুলিশ সুনাম দেবনাথের কথা ছাড়া নয়ন বন্ডদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নিত না। আর এত বড় ঘটনার পর সুনাম কোনো প্রভাব খাটাবে না- এটা হতে পারে না। এ বিষয়ে সুনাম দেবনাথের বক্তব্য জানতে গত কয়েক দিনে অন্তত আটবার তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

খুদে পক্ষ থেকে তার সঙ্গে দেখা করতে চাওয়া ইচ্ছার কথা জানানো হলেও সুনাম দেবনাথের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। সুনাম দেবনাথকে না পেয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন তার বাবা ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনেই প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী রিফাত শরীফকে রাম দা দিয়ে কোপাচ্ছেন।

রিফাত ফরাজীর ভাই রিশান ফরাজী রিফাত শরীফকে জাপটে ধরে হত্যাকাণ্ডের অংশ নিয়েছে। স্ত্রী মিন্নি স্বামীকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করে গেলেও তিনজন পুরুষের সামনে একা পেরে উঠতে পারছিলেন না। পরে গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।

গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। পরে মিন্নিকেও রিফাত হত্যা মামলার আসামি করে গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলা ভিন্ন খাতে নিতে ষড়যন্ত্র চলছে :

শুক্রবার (২৬জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকান্ডের শিকার রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ দাবি করেছেন তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা পিবিআই ও সিআইডির তদন্ত দাবি করছেন। লিখিত বক্তব্যে দুলাল শরীফ বলেন, আমার ছেলে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মিন্নিসহ ১৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

১৫ আসামিই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার সামগ্রিক কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এগিয়ে চললেও প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এক পক্ষ। তদন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। পরে মিন্নিকেও রিফাত হত্যা মামলার আসামি করে গ্রেফতার দেখানো হয়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD