সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বাংলাদেশী শ্রমিক নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেল তিন টা থেকে বিবদমান ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া সংঘাতে বিদ্যুত প্লান্ট এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এ সংঘাতে বহিরাগতর স্বার্থান্বেষী একটি গ্রুপ জড়িতের বিষয়টি প্রশাসনের একাধিক সংস্থা ক্ষতিয়ে দেখছে। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া এক চায়নিজ শ্রমিক ঝাং ইয়াং ফাং (২৬) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার ভোর রাতে মারা গেছেন। এছাড়া সংঘাতে আরও তিন জন বাঙ্গালী ও দুই জন চায়নিজ শ্রমিক গুরুতর জখম হয়েছে। চীনা শ্রমিকদের পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে মঙ্গলবার রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। বর্তমানে প্লান্ট এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ র্যাব মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শ্রমিকরা যার যার শেড এলাকায় অবস্থান করছেন।
বিদ্যুত প্লান্টের মেইন গেট ভাংচুর করা হয়েছে। বাউন্ডিারি দেয়াল ভাঙ্গা হয়েছে। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমানসহ বিসিপিসিএলএর কর্মকর্তারা কয়েক দফা জরুরি বৈঠক করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে বিদ্যুত জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিদ্যুতপ্লান্ট এলাকা পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি প্লান্টের বাংলা ক্যান্টিন এলাকা পরিদর্শন করেন। প্রশাসন ও বিসিপিসিএলএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোটা বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছেন। একাধিক সুত্রমতে এ বছরের শুরুতেই ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুত প্লান্টের একটি ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট চালুর সকল প্রস্তুতি সম্পন্নের পথে। হঠাৎ করে বয়লার থেকে নিচে পড়ে সাবিন্দ্র দাস নামের হবিগঞ্জ এলাকার এক শ্রমিক নিহতের জের ধরে শ্রমিকরা প্রতিবাদ ক্ষোভ জানাতেই পারে। হঠাৎ করে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু পুলিশের ওপর হামলা। নির্মানাধীন বিদ্যুত প্লান্টের অফিস ক্যাম্পাসে হামলা-ভাংচুর। অফিসের ল্যাপটপসহ মালামাল লুটের মতো ঘটনা রহস্যের সৃষ্টি করেছে। এছাড়া বিকেল তিনটা থেকে অন্তত নয় ঘন্টা হাজারো শ্রমিক জড়ো হয়ে সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার কারণ খুঁজছে একাধিক সংস্থা। বিদ্যুত প্লান্টের নির্মাণ কাজ শুরুর থেকে শ্রমিক সরবরাহ প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের যথাযথ পারিশ্রমিক না দেওয়ার ঘটনায় কিছু অসন্তোষ ছিল।
যা নিয়ে ইতিপুর্বে শ্রমিকদের সঙ্গে এক দফা বিরোধ হয়। শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশের বৈধ কাগজপত্র ছিল না। এনিয়ে বৈধ শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। প্লান্ট এলাকায় নির্মান কাজের উপকরণ বালু, ইট-পাথর সরবরাহ নিয়ে স্থানীয় কয়েকটি চক্র বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। প্লান্ট অভ্যন্তরে ভাঙ্গা লোহা-লক্কর (ভাঙ্গারি) এর ব্যবসা নিয়ে প্রকাশ্যে ট্রাক আটকে ভাংচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব স্বার্থের সঙ্গে জড়িত চক্রটি ফায়দা লুটতে কলকাঠি নাড়ছে কি না তাও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে। বর্তমানে প্লান্ট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
Leave a Reply