রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার দুইটি সরকারি বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে এক ছাত্রী নিহত ও ছয়জন আহত হয়। অনুসন্ধানে জানাগেছে আমতলী উপজেলার ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে চার হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছে। এসব বিদ্যালয় যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে।এদিকে,পরপর দুটি বিদ্যালয়ে ছাদের বিম ধসে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে সাহস পাচ্ছে না অভিভাবকরা। যে কারণে অনেক বিদ্যালয়ই বন্ধের উপক্রম।
আমতলী প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ও ২০টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ। এ জরাজীর্ণ ভবনগুলো ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে জরাজীর্ণ ভবনগুলোতেই চলছে পাঠদান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চার হাজার শিক্ষার্থী জরাজীর্ণ ভবনে পাঠ নিচ্ছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মজিবুর রহমান গাজীপুর বন্দর, জেবি সেনের হাট, আড়পাঙ্গাশিয়া, চাওড়া লোদা, পূর্ব চরকগাছিয়া, উত্তর সোনাখালী ও দক্ষিণপূর্ব গুলিশাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন। গত ১ এপ্রিল ভবনগুলো অপসারনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দরপত্র আহবান শেষে কার্যাদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও ২০টি বিদ্যালয়কে জরাজীর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো হলো- উত্তর সোনাখালী, পূর্ব চন্দ্রা, আমতলী একে হাই, পশ্চিম আমতলী, পূর্ব তারিকাটা, পূর্ব তক্তাবুনিয়া, উত্তর পশ্চিম চিলা, দক্ষিণ ঘোপখালী , পূর্ব তারিকাটা এসটি, চাউলা, পশ্চিম ঘটখালী, উত্তর গোজখালী, মধ্য সোনাখালী, চুনা বোর্ড, কালিবাড়ী, কুকুয়া হাট, চলাভাঙ্গা, ভায়লাবুনিয়া ও খোন্তাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
শিক্ষক ও অভিভাবকের অভিযোগ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণ করায় অল্পদিনের মধ্যে ভবনগুলো ভগ্ন দশায় পরিণত হয়েছে।বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে নির্মিত ভবনগুলোর ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। রড বেড়িয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে। কক্ষের ভেতরের দেয়ালে ফাটল রয়েছে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে।
৫৫নং পশ্চিম আমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইবাদ, আবদুর রব, আমেনা ও রবিউল, জাহিদুল, ইশান ও নাবিয়া জানান, প্রতিদিন ভবনের পলেস্তার খসে পড়ছে। ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। এ জরাজীর্ণ ভবনে ক্লাস করার সময়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দ্রুত নতুন ভবনের দাবি জানিয়েছেন।
আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফখরুল শাহ আল আমিন বলেন, ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ঠাসাঠাসি করে পাঠদান করাতে হচ্ছে।আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আমার কাছে কোনো জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা দেয়নি।আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মজিবুর রহমান জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদানের কথা স্বীকার করে বলেন, জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা করে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে জমা দিয়েছি। ৭টি পরিত্যক্ত বিদ্যালয়ের ভবন অপসারনের জন্য দরপত্র আহবান শেষে কার্যাদেশ দিয়েছি। যারা ভবন অপসারণের কাজ পেয়েছে তারা দ্রুত কাজ শুরু করবেন।
Leave a Reply