সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ চলছে বর্ষাকাল, এর মধ্যে ছেলে/মেয়ে পরিবার-পরিজন রেখে বরিশাল লঞ্চ ঘাটে চলে আসে অর্থ উপার্জনের জন্য মাহিন্দ্র চালকরা। তারা যাত্রীদের নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিতে কষ্ট করে থাকে। কিন্তু সেই কষ্টের টাকার ভাগ দিতে হয় চাঁদাবাজদের।
বরিশাল সিটি মেয়র যখন চাঁদাবাজী ও সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ঠিক তখনেই কৌশলে চাঁদাবাজির অনুমতি দিলেন শ্রমিক নেতা পরিমল দাস ও কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিটন মোল্লা । জানা গেছে, প্রতিদিন ঢাকা থেকে ভোর রাতে বরিশালে পৌছায় বিশাল বহুল লঞ্চগুলো। আর যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নেমে নিজের গন্তব্যে যেতে নানা ধরনের যানবহন ব্যবহার করে। বরিশাল রূপাতলী বাস মালিক সমিতি বেশ কয়েকটি গাড়িও রাখে লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায়। লঞ্চ ঘাটের খুব কাছে রাখে ব্যাটারী চালিত অটো। পাশেই রাখা থাকে আলফা বা মাহিন্দ্রা গাড়ি।
এসব আলফা মাহিন্দ্রা গাড়ির সিরিয়াল করার জন্য একজন ব্যক্তি থাকেন। এর আগেও এঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিলো। সেই ব্যক্তি ছিলো বিএনপি নেতা মোঃ জাকির হোসেন। সংবাদ প্রকাশের পরে নড়েচরে বসে আলফা-মাহিন্দ্রা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ আর শ্রমিক নেতা পরিমল।
পরে বিষয়টি ভিন্নভাবে পরিচালনার জন্য তথাকথিত যুবলীগ নামধারী এক নেতাকে লাইনম্যান হিসাবে নিয়োগ দেন শ্রমিক নেতা পরিমল। জানা গেছে ওই কথাকথিত নেতা বরিশাল নগরী ১০ নং ওয়ার্ডের ভাটার খাল এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ এবং মাদক ব্যবসায়ী। একাধিক মামলার আসামী। তিনি কোন দলের সাথে সক্রিয় ভাবে জরিত না থাকলেও বর্তমানে যুবলীগের সাইন বোড লাগিয়ে অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করছে। প্রতি রাতে আলফা-মাহিন্দ্রা প্রতি ৫০ টাকা করে উত্তোলন করতে দেখা যায় ওই বিএনপির নেতা জাকিরকে।
বিষয়টি জানতে চাইলে জাকির জানান, আমরা৩/৪ ভাগে ঘাট চালাই। এরা হল আমার চাচতো ভাই সেন্টু, কথাকথিত যুবলীগ নেতা সাদ্দাম, জাকির ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আলমগীর । প্রতি রাতে প্রায় ৩/৪ হাজার টাকা সিরিয়ালের নামে কালেকশন হয়। আর এই টাকা ভাগা চলে যায় শ্রমিক নেতা পরিমল, আলফা মাহিন্দ্রা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি, কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মোল্লা এবং আওয়ামীলীগের ভান্ডারে এমনটাই জানালেন জাকির হোসেন।
বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক নেতা পরিমলের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান ওই খানে আমি একজন লাইনম্যান দিয়েছি। লাইনম্যান না থাকলে নানা সমস্যা হয়। চাঁদাবাজির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতে ওরা থাকে ৫/১০ টাকা নিতে পারে। তিনি আরো বলেন এই বিষয়টা নিয়ে চেয়ারম্যান লিটন মোল্লার কাছে জানলে আরো ভাল হবে।
একাধিক আলফা-মাহিন্দ্রা ড্রাইভার’রা জানান, আমরা সবাই এই সিটির ভোটার আর আমাদের অভিভাবক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ তিনি নানান কাজ করে মানুষের প্রসংসা কুড়িয়েছেন কিন্তু আমাদের জন্য কিছু করা উচিৎ। তারা নগরপিতার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা আরো বলেন আমাদের কেউ ২/১ দিন টাকা না দিলে আমাদেরকে খেতে হয় মার। জাকির গংরা আমাদের মারধর করে তারপর টাকা নিয়ে নেয়।
এব্যাপারে কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আলফা-মাহিন্দ্রা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লিটন মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমরা একজনকে দায়িত্ব দিয়েছি। তবে কোন টাকা কালেকশন করার অনুমতি দেই নাই। আপনার নিউজ করার দরকার নাই আমি ওদের সন্ধ্যায় ডাকি তারপরে বলবো।
এবিষয়ে কোতয়ালী থানায় অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ নুরুল ইসলাম (পিপিএম) জানায়, আসলে বিষয়টি আমার নজরে নেই, ওখানে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply