শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল : আর মাত্র দুই দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই আপনজনদের সঙ্গে ঈদ কাটাতে রাজধানীসহ বিভিন্ন কর্মস্থল থেকে মানুষ ফিরছেন নিজ ঠিকানায়। এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঘরে ‘ফেরার যুদ্ধ’। শনিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যার পরপরই ঢাকার সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখী লঞ্চগুলো কয়েক লাখ মানুষ নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। ভোরেই লঞ্চগুলো যাত্রীদের বরিশাল নদীবন্দরে এনে পৌঁছায় এবং যাত্রী নামিয়ে দিয়েই আবারও রাজধানীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করার প্রস্তুতি নেয়। এসময় যাত্রীদের পদচারণায় মুখর হয়ে যায় গোটা নদীবন্দর এলাকা। পরে অন্ধকার থাকতেই সড়ক বাতির আলো ধরে অনেকে ছুটতে শুরু করেন আপন ঠিকানায়। তবে ভোরে সড়কপথের যানবাহন ভাড়া করতে গিয়ে অনেকেই পড়েছেন বিড়াম্বনায়। যাত্রীরা বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ তুললেও চালকরা এ নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ করছেন না। সুজন হাওলাদার নামে এক যাত্রী বলেন, লঞ্চে বরিশাল পর্যন্ত আসাটা বেশ ভালোই ছিল।
তবে লঞ্চঘাট থেকে গন্তব্যে যেতে রিকশা বা অটোরিকশার চালকরা ভাড়াটা অনেক বেশিই চাচ্ছেন। কম বললে এমন ভাব দেখাচ্ছেন যে ‘যাইতে মন চাইলে যান, নইলে সরেন’। তিনি বলেন, যানবাহনের ভাড়ার বিষয়ে কোনো নজরদারি নেই কারও। যে যার মতো ভাড়া চাচ্ছে। এখান থেকে কাশিপুর বাজারে যেতে চাই, রিকশা চাচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা আর ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় দেড়শ’ টাকা। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে রিকশার ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর অটোরিকশায় ৭০ থেকে ৮০ টাকা হতে পারে। জাহিদ হাসান নামে এক যুবক বলেন, পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে বরিশালে দাদার বাড়িতে যাচ্ছি কোরবানির ঈদ পালন করতে। ভোরে লঞ্চ থেকে নামায় এখন একটি থ্রি-হুইলার (মাহিন্দ্রা) ঠিক করার চেষ্টা করছি।
বরিশাল সদরের শায়েস্তাবাদ বাজারে যাবো। কিন্তু পাঁচ থেকে ছয়শ’ টাকা ভাড়া চেয়ে বসে আছে সবাই। আমার জানামতে ভাড়া এর অর্ধেক হবে এখানে। শ্রম দিয়ে টাকা আয় করবেন এমনটা জানিয়ে সিরাজ নামে এক রিকশা চালক বলেন, রাইত (রাত) যাইগ্যা (জেগে) খালি রিকশা টাইনা (টেনে) আইসি (আসছি)। অনেকক্ষণ অপেক্ষা কইরাও (করেও) যদি ভালো ট্রিপ পাই হেলে (তবে) সব কষ্ট দূর হইয়া (হয়ে) যাইবে। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের চালক রাসেল বলেন, লঞ্চ দেরিতে আইছে (আসছে), হারা রাইত (সারা রাত) যাইগ্যা থাইক্কা (জেগে থেকে) অপেক্ষা হইরা (করে) এহন মোনে (এখন মনে) হয় একটা ট্রিপই দেতে (দিতে পারবো) পারমু। হেইয়ার লইগ্যা (এর জন্য) দূরের ট্রিপ চাই।
পোথ বুইঝ্যা (পথ বুঝে) যে ভাড়া চাইছি, হেতে (সেটা) তো মোনে (মনে) হয় না তেমন বেশি চাইছি। একই কথা জানিয়ে মাহিন্দ্রা চালক সালাম বলেন, রাইত যাইগ্যা মোরা (আমরা) যদি যাত্রীগো গন্তব্যে পৌঁছাইয়া দেতে (দিতে) পারি, হেলে (তবে) ঈদের সোময় (সময়) কয়ডা টাহা (কয়েকটা টাকা) যাত্রীদের বাড়াইয়া (বাড়িয়ে) দিলে কি অয় (হয়)। এদিকে, ভোরের সময় হলেও বরিশাল নদীবন্দর থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকা বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, ঝালকাঠি বা আশপাশের জেলা-উপজেলায় যাওয়ার জন্য রিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ যেকোনো যানবাহনের কমতি দেখা যায়নি। অপরদিকে, সড়ক নিরাপদেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
Leave a Reply