রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমিক্ষা অনুযায়ী বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মেঘনার পানি। ভাঙনে দিশেহারা হিজলার অসহায় মানুষ। মেঘনায় স্রোত ও পনি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল বেপরোয়াভাবে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর।
উপজেলা সদর, বাউশিয়া, বাহেরচর, পুরাতন হিজলা, দুর্গাপুর, হরিনাথপুর, হিজলা-গৌরব্দী ধুলখোলাসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত বাড়িঘর, স্কুল মেঘনায় তলিয়ে গেছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে সমগ্র হিজলার চরাঞ্চল। মেঘনার ভাঙ্গন যেন হিজলা বাসীর পিছু ছাড়ছে না।
এব্যাপারে বড়জালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পন্ডিত শাহাবুদ্দিন জানান, মেঘনার পাড়ে বড়জালিয়ার ৮টি গ্রাম। এগুলো ধীরে ধীরে মেঘনায় হারিয়ে যাচ্ছে। মাত্র ২ দিনেই বাউশিয়া গ্রামের শতাধিক বসতঘর মেঘনায় হারিয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল জোন প্রধান হারুন অর রশিদ যে স্থান পরিদর্শন করেছেন তাও ভেঙে গেছে। মাত্র ২০০ মিটার দূরে উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক ভবন।
স্থানীয় এমপি পংকজ নাথের সহায়তায় বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড এরইমধ্যে হিজলা উপজেলা রক্ষার্থে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন। সে টাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তাও বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ভাঙছে পুরাতন হিজলা, দুর্গাপুর, লক্ষীপুর, বাহেরচর।
হরিনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ. লতিফ শিকদার জানান, প্রবল পনির তোড়ে ভেসে গেছে তার ইউপি। ৫২ ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি “বদরটুনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়” হরিনাথপুর বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেকোন মুহুর্তে হারিয়ে যেতে পারে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড এর হিজলায় কর্মরত গেজ মাষ্টার তৌহিদুল আলম এবং গেজ মাষ্টার আ. হাদি জানান, বর্তমানে উজান থেকে নেমে আসা পহাড়ি ঢল, জোয়ারের প্রভাবের কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হিজলা উপজেলা মেঘনার দুটি পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে হিজলা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাউশিয়ার মেঘনা এবং অপরটি হচ্ছে হরিনাথপুর এলাকার আবুপুর অঞ্চল। হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে এলাকাগুলো তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে।
স্থানীয় মকবুল আলম মাষ্টার, রফিক খান, আলী আকবর শিকদার, বাকের ফকির মনে করেন, ৫০ লাখ টাকার জিও ব্যাগ এ অঞ্চলের জন্য যথেষ্ট নয়। পরিসর অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তা না হলে সবকিছু চোখের নিমিষে হারিয়ে যাবে।
অসহায় পরিবারগুলো বলছেন, ভিটেমাটি নেই। একটি মাত্র রাস্তা আছে বাউশিয়ায়। সেখানে রয়েছে তিনটি সাইক্লোন সেল্টার, একটি কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাদ্রাসা, সমজিদ। হাজারো পরিবারের গাদাগাদি করে বসবাস করছে সেখানে।
হিজলা ইউএনও বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, এখন পর্যন্ত সরকারি কোন ত্রাণ বা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়নি। সরকারি ত্রাণ আসলেই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় আনা হবে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিনাঞ্চল জোন প্রধান হারুন অর রশিদ জানান, সরকার থেকে যে পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়েছে তা দিয়েই কাজের সূচনা করা হয়েছে। এরইমধ্যে বাউশিয়াসহ হিজলা উপজেলা রক্ষা বাঁধের জন্য ৪ শত ৮০ কোটি টাকার একটি মেঘা প্রকল্প মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা ভাঙন রোধে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
Leave a Reply