শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:বিয়ের প্রলোভনে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার বালিগ্রাম ইউনিয়নে মাদ্রাসার দুই ছাত্রীকে দু’দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।জানা যায়, উপজেলার আটিপাড়া গ্রামের সাকিব ও হৃদয় তাদের ৩-৪ জন বন্ধুরা মিলে এ কাজ করেছে। বখাটের পরিবার এলাকার প্রভাশালী ও সাকিব সাবেক ইউপি মেম্বারের ছেলে তাই টাকার বিনিময় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা যায়। এব্যাপারে প্রসাশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযুক্ত অসহায় পরিবার জানায় গত বুধবার সকাল থেকে তাদের দুই মেয়ে মাদ্রাসায় ৫ম ও ৭ম শ্রেণির ছাত্রী বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ। অনেক খোঁজাখুঁজি করে বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙ্গাব্রীজ নামক স্থানে ইতালি প্রবাসী মাহবুব সর্দারের বিলাশ বহুল বাড়িতে তালাবদ্ধ অবস্থায় দুই মেয়েসহ বালীগ্রাম ইউনিয়ের আটিপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার মজিবর হাওলাদের ছেলে সাকিব ও একই এলাকা হৃদয়, আলামিন, শাওনসহ ৪-৫ জনকে আটক করে এলাকাবাসী।তবে পুলিশকে বিষটি জানালেও তারা দেরি করায় একই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান মতিন মোল্লাসহ এলাকার প্রভাশালীদের নিয়ে টাকার বিনিময় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। মেয়ে পক্ষ এতে রাজী না হওয়া শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে ডাসার থানার পুলিশ এসে দুই মেয়ের একটি মেয়ে ও তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিকালে থানায় নিয়ে যায়। ওই দুই মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুদিন আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হোক এবং এরকম ঘটনা যাতে পুণরায় না ঘটে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
দুই জনের মা ও ভাই এর উপযুক্ত বিচারের দাবি জানিয়েছে। তারা বলেন আমরা গরিব অসহায় নুন আনতে পান্তা ফুরায়, এই মেয়েটিকে তো বিবাহ দিতে হবে, কে এই অবস্থায় বিয়ে করবে। সরকারের কাছে আমাদের একটায় দাবি একটি সুন্দর বিচা।িভিকটিম একজন মাদ্রাসার ছাত্রী বলেন, আমার সাথে সাকিবের প্রেম ও আমার বান্ধবীর সাথে হৃদয় নামে আর একটি ছেলের প্রেম ছিল সেই কারণে আমাদের মাদ্রাসা থেকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে মাদারীপুরের বিভিন্নস্থান ঘুরিয়ে বিবাহ করার প্রলোভন দেখিয়ে রাতে আটকে রেখে শারীরিক মেলামেশা করেছে। আমরা চলে আসতে চাইলেও আমাদের নানা ভয় ভীতি দেখিয়ে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে ওদের বন্ধুরা জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। আমরা অসুস্থ থাকায় কিছু বলার ক্ষমতা ছিল না। এরপর পরের দিন আমাদের দুজনকে একই ঘরে আটকে রেখে একজন বাহিরে যেত কিছুক্ষণ পর আর একজন আসত এভাবেই রাত পর্যন্ত আমরা ঐখানে ছিলাম। পরে এলাকার লোকজন আমাদের উদ্ধার করে। মাদ্রাসায় পড়ুয়া একটি মেয়ে বলেন আমার সাথে সাকিবের প্রেম ছিল সে আমাকে বিয়ে করবে বলে আমার সর্বনাশ করেছে আমি ওকেই বিয়ে করতে চাই।
বতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবু আলেম জানান, এরা দুইজন বুধবার সকাল দশটার দিকে বইখাতা রেখে পালিয়েছে এরপর আর এদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এখনতো বাড়িতে এসে জানতে পারলাম এই ঘটনা।বালীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা জানান, আমার কাছে আসার পর সঠিক তথ্য চেয়ে সময় বেধে দিয়েছিলাম তারা আর আমার কাছে কোন তথ্য নিয়ে আসেন নাই। আমরা কোন সালিস করি নাই।অভিযুক্ত সাকিবের বাবার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সাকিবের মা বলছে আমাদের অনেক শত্রু আছে তারা এগুলো করছে। আমার ছেলে দুদিন রাতে বাড়ি ছিল। তাছাড়া তার বন্ধুরা তাকে ডেকে নিয়েছে।মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালাদার বলেন, আমরা একটি মেয়ে ও তার বাবা মামলা করার জন্য নিয়ে আসছি। প্রয়োজনে আর একজনেও মামলা নেয়া হবে। আমরা চেষ্টা করবো মেয়ে দুটি যাতে তাদের উপযুক্ত বিচার পায় সেই ব্যবস্থা করবো। তাছাড়া যার সালিস করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply