রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৪ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলায় প্রায় সঙ্কটাপন্ন হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির একটি শকুন উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। মঙ্গলবার বিকেলে ভোলার সদর উপজেলা ইলিশা ইউনিয়নের বটতলা এলাকা থেকে শকুনটি উদ্ধার করা হয়।
ভোলা বনবিভাগের বণ্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ও সদর উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, বিকেলে শকুনটি উড়তে উড়তে সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে মজিদ মেম্বারের বাড়ির উঠানে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ বন বিভাগকে জানায়।
পরে বন বিভাগের একটি দল সেখান থেকে শকুনটি উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বন বিভাগে নিয়ে যায়। ওষুধের পাশাপাশি খাবার-দাবার দিয়ে সুস্থ করে শকুনটিকে বন বিভাগের সংরক্ষিত বনের গহীনে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান তারা।
ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির কো-অর্ডিনেটর ও বন্যপ্রাণী গবেষক সামিউল মেহেসানিন ই-মেইলের মাধ্যমে শকুটির ছবি দেখে এটিকে হিমালয়ী শকুন (Himalayan Griffon) বা হিমালয়ান গৃধিনী বলে চিহ্নিত করেন।
হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির এই শকুনগুলো বাংলাদেশে সচারাচর দেখা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তরে প্রচণ্ড শীতের কারণে হিমালয় থেকে শকুনটি খাবারের সন্ধানে ভোলায় এসেছে। আইইউসিএন এর রেড লিস্টের অবস্থান অনুযায়ী, এই প্রজাতির শকুন প্রায় সঙ্কটাপন্ন। এই প্রজাতির শকুন নিকট ভবিষ্যতে বিপদাপন্ন তালিকাভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সামিউল মেহেসানিন বলেন, পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে মহাবিপন্ন (Critically Endangered)। বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য সঙ্কট এবং বাসস্থান সঙ্কটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে। শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানোর পাশাপাশি দেশের মানুষ এনথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু হতে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। বনবিভাগসহ বিভিন্ন সংগঠন শকুন রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাখিটির প্রতি প্রত্যেক মানুষের সদয় হওয়া প্রয়োজন।
Leave a Reply