ভোলায় সড়কের কাজ বন্ধ Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




ভোলায় সড়কের কাজ বন্ধ

ভোলায় সড়কের কাজ বন্ধ

ভোলায় সড়কের কাজ বন্ধ




নিজস্ব প্রতিনিধি॥ সড়কের দুই পাশে গভীর খাদ। মাঝবরাবর চলছে ছোট-বড় যানবাহন। একটু পেছলে গেলেই দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। এই চিত্র বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর সড়কের ভোলা অংশের ছয় কিলোমিটারের।

 

 

সড়কের এই অংশের বর্ধিতকরণের কাজ বন্ধ রয়েছে। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি এর কার্যাদেশ হয়। মার্চে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। ঠিকাদারের প্রতিনিধি আক্তার হোসেন জানান, সড়কের পাশে সামাজিক বনায়নের গাছ কাটা নিয়ে বন বিভাগ ও স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার মধ্যে বিরোধের জেরে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে। এ কারণে সেপ্টেম্বরে বর্ধিতকরণের কাজ বন্ধ করে দেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।

 

 

বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের ভোলা অংশে ১৬ কিলোমিটার। বর্তমানে সড়কের প্রস্থ সাড়ে ৫ মিটার। এই সড়ককে সরল ও বর্ধিত করে ১০ দশমিক ৩০ মিটার করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড শিপিং করপোরেশন ও রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লি. (জেভি)।

 

 

সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ও ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় মহাসড়ক সরল ও বর্ধিতকরণের জন্য কাজ শুরু হয়েছিল। দুই ঘাটের প্রায় ছয় কিলোমিটারে কোথাও এক পাশে, কোথাও দুই পাশে গভীর করে খাদ করা হয়েছে।

 

 

আদালত কাকে গাছ কাটতে নির্দেশ দিয়েছেন, সে বিষয়ে অস্বচ্ছ থাকায় বন বিভাগ পুনরায় আপিল করে। এ কারণে গাছ কাটা বন্ধ আছে। সড়কের কাজও বন্ধ আছে।

 

 

সরেজমিন দেখা যায়, ফেরিঘাট এলাকায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নিজস্ব পার্কিং নেই। অপেক্ষমাণ গাড়িগুলো সড়কের ওপর রাখা। সড়কের পাশে গর্ত হওয়ার কারণে মূল সড়ক দখল করে যানবাহনকে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে যানবাহন চলাচলের স্থান কমে গেছে।

 

 

সড়কে চলাচলকারী একাধিক চালকের ভাষ্য, ইলিশা ফেরি ও লঞ্চঘাট থেকে দিনে ও রাতে পাঁচটি নৌপথের লঞ্চ, সিট্রাক, ফেরি, ট্রলার ও স্পিডবোট ছাড়ে। এ মহাসড়কে উপকূলীয় এলাকার ২১ জেলার মানুষ ও যানবাহন চলছে। সেই মহাসড়কের দুই পাশে গভীর খাদ করে ফেলে রাখা মারাত্মক ঝুঁকির।

 

 

ভোলা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল আহসান বলেন, সড়ক বর্ধিতকরণে গাছ অপসারণের জন্য বন বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগ গাছ কাটা শুরু করলে, সওজ ও বন বিভাগকে বিবাদী করে বেসরকারি সংস্থা বিসাস উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। আদালত গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।

 

 

সড়ক বিভাগ বিসাসকে ১৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে সামাজিক বনায়নের অনুমতি দিয়েছে। তখন বন বিভাগের লাগানো গাছের সারির সামনে দিয়ে বিসাস জোর করে কিছু গাছ লাগায় এবং পুরো বনের মালিকানা দাবি করে।

 

 

উপকূলীয় বন বিভাগ সূত্র ও সামাজিক বনায়নের স্থানীয় উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে সওজ ও বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে বরিশাল–ভোলা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভোলা অংশের ৯ কিমি (ভেদুরিয়া ফেরিঘাট হতে পশ্চিম ইলিশার হাওলাদার বাজার পর্যন্ত) এ সামাজিক বনায়ন করা হয়। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে একই মহাসড়কের ছয় কিলোমিটারে (হীড-বাংলাদেশ হতে চডারমাথা ইসলামী ফাউন্ডেশন) একই প্রক্রিয়ায় বনায়ন করে; অর্থাৎ ভেদুরিয়া ফেরিঘাট থেকে শুরু ইলিশা ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটারের দুই পাশে সামাজিক বনায়ন করে বন বিভাগ। নীতিমালা অনুসারে, ১৯৯৪ সালের গাছগুলো ২০০৯-১০ অর্থবছরে বিক্রি হয়। ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের পরিবেশ ও বন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির এক সভায় পুনরায় মহাসড়কের (ওই অংশে) পাশে গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত সড়ক বিভাগ, স্থানীয় সওজের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ওই অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে বন বিভাগ ‘দারিদ্র্য নিরসন ও জলবায়ু ক্ষতিকর মোকাবিলায় উপকূলীয় অঞ্চলে বনায়ন’ প্রকল্পের আওতায় সড়কের ৯ কিলোমিটার সড়কে ফলদ ও বনজ গাছের চারা লাগায়।

 

 

সড়কে গাছের চারা লাগানোর সময় ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (বিসাস) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা সাইনবোর্ড লাগিয়ে বনায়নের ঘোষণা দেয়। তারা একটি চুক্তিপত্র দেখিয়ে বলে, সড়ক বিভাগ বিসাসকে ১৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে সামাজিক বনায়নের অনুমতি দিয়েছে। তখন বন বিভাগের লাগানো গাছের সারির সামনে দিয়ে বিসাস জোর করে কিছু গাছ লাগায় এবং পুরো বনের মালিকানা দাবি করে।

 

 

বিসাসের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, জেলা প্রশাসকের দপ্তরে বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠক হয়েছিল। সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হতেই বন বিভাগ গাছ কাটার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে। তখন সংস্থার পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। আদালত সংস্থাকে এক মাসের মধ্যে গাছ কাটার নির্দেশ দেয়। কিন্তু বন বিভাগ কাছ কাটতে দেয়নি।

 

 

তবে উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, আদালত কাকে গাছ কাটতে নির্দেশ দিয়েছেন, সে বিষয়ে অস্বচ্ছ থাকায় বন বিভাগ পুনরায় আপিল করে। এ কারণে গাছ কাটা বন্ধ আছে। সড়কের কাজও বন্ধ আছে।

 

 

তৌফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বিসাস যে মামলাটি করেছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক। কারণ, বন বিভাগ কিছু বন সৃজন করেছে ২০০৩-০৪ অর্থবছরে। তখন বিসাসের জন্ম হয়নি। এখন তারা গাছের মালিকানা দাবি করছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD