বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৩ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশালে মানবপাচার মামলার প্রধান আসামির স্ত্রী, বাবা ও শ্বশুরসহ তিন জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামিকে স্থায়ী জামিনের আদেশ দেওয়া হয়। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এই আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলো– প্রধান পলাতক আসামি জসিম উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, জসিমের বাবা হারুনর রশিদ এবং তার শ্বশুর কাজী শামসুর রহমান। তারা সবাই বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। জামিন পাওয়া দুজন হলেন– জসিমের ভাই এনামুল হক এবং শ্যালক ইমন কাজী।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি কাইউম খান কায়সার জানান, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত বরিশালের উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও মুলাদীর ১৬ ব্যক্তিকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে পাচার করে জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, ভাই এনামুল হক, বাবা হারুনর রশিদ, শ্বশুর কাজী শামসুর রহমান, শ্যালক ইমান কাজী ও ছোট ভাই পলাশ হাওলাদার।
প্রতিশ্রুত দেশে না পাঠিয়ে ভানুয়াতুতে নিয়ে তাদের অভুক্ত অবস্থায় একটি জায়গায় আটকে রাখে। সেখান থেকে ১২ জন পালিয়ে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। এরপর অবৈধ মানবপাচারের অন্যতম হোতা পলাশ হাওলদারসহ চার জনকে গ্রেফতার এবং পাচারের শিকার সবাইকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভানুয়াতুতে মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় পলাশ এখনও সেখানকার জেলে রয়েছে।
পরে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ওই ১৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনে। এসে তারা টাকা ফেরত চাইলে মানবপাচারকারী চক্র উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুটি মামলা দিয়ে বিপাকে ফেলে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ১৬ জনের পক্ষে উজিরপুরের মোফাজ্জেল হোসেন বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে জসিম উদ্দিন ও পলাশ হাওলাদারসহ তাদের নিকটাত্মীয় সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল এই মামলার পলাতক সাত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। পরে তারা উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেয়। গত মঙ্গলবার আসামিদের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার ধার্য তারিখে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে তারা স্থায়ী জামিনের আবেদন করে। বিচারক দুজনের জামিন স্থায়ী করেন এবং অপর তিন জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Leave a Reply