নগরীর কাউনিয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে মাদক কারবারী সজিব-সজল Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




নগরীর কাউনিয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে মাদক কারবারী সজিব-সজল

নগরীর কাউনিয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে মাদক কারবারী সজিব-সজল




নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে সজিব-সজল দুই ভাই। তাদের কারণে শান্ত কাউনিয়া ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে। কিশোর বয়সেই স্কুল ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করা সজিব জামিনে মুক্ত হয়েই সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায় নাম লেখান। বরিশালের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বাবুল ওরফে বিসিক বাবুলের মাধ্যমে মাদকের হাতি খড়ি হয় তার। এরপর আস্তে আস্তে নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া এলাকায় গড়ে তোলে মাদকের সর্গরাজ্য।

তাদের দুই ভাইয়ের ভয়াল নেশা মাদক বিক্রির কারণে স্থানীয় যুব সমাজ আজ ধ্বংসের দাড়প্রান্তে। স্থানীয়রা তাদের সন্তান নিয়ে রয়েছেন অজানা শংকায়। তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বলেছেন, বরিশালে কোন “নয়ন বন্ড” তৈরী হতে দেয়া হবে না।

এছাড়া তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথাও বলেন। যার ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে সুফল পাচ্ছে নগরবাসী আর একের পর এক মাদকের বিশাল চালানও ধরা পড়ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। কাউনিয়াবাসীর দাবী মাদক নির্মূলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন তারা।

যা বরিশাল পুলিশের কর্নধর শাহাবুদ্দিন খান’র উপস্থিতিতেই ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে বলেছেন তারা। এদিকে সজিব-সজিল দুই সহোদরের সন্ত্রাসী কর্মকা-ে এলাকাবাসী জিম্মী হয়ে পড়েছে। তবে বিএমপি কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বরিশালে যোগদান করার পর থেকে তারা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেন। সজিব-সজল দুই ভাইয়ের মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে ফুঁসে উঠেছেন তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাউনিয়া বিসিক এলাকার বাসিন্দা আব্বাছ খান পশ্চিম কাউনিয়া এলাকায় জমি ক্রয় করে আবাস গড়ে তোলেন। আব্বাছ খানের দুই ছেলে শাহাদাত হোসেন সজিব ও সজল।

যাদের নেশা-পেশা অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন। ইতিপূর্বে একাধিকবার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাদকসহ গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক ফোকড় গলে জামিনে মুক্ত হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মরণ নেশা ইয়াবার ব্যবসা। সূত্র আরো জানায়, সজিব-সজলের পিতা আব্বাছ খানও একজন নেশাখোর হিসেবে এলাকায় পরিচিত। একাধিক বিয়ে করায় বর্তমান স্ত্রীকে নিয়ে পশ্চিম কাউনিয়ায় বাস করেন তিনি। ছেলেদের শাসনের পরিবর্তে তাদের অবৈধ কর্মকা-ে প্রশ্রয় দেয়া বেপরোয়া হয়ে উঠে দুই ভাই সজিব-সজল।

২০০৯ সালে জিলা স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থী ৭ম শ্রেনীর ছাত্র ইসতিয়াক খান সৌরভকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল। সেই মামলায় আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ী জড়িয়ে পড়ে সজিব। নগরীর চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বাবুল ওরফে বিসিক বাবুলের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায় যুক্ত হয় সজিব। এরপর নিজেই গড়ে তোলে মাদক সিন্ডিকেট। যাতে যুক্ত করে তার আপন সহোদর সজলকেও। এছাড়া তার অন্যতম সহযোগির তালিকায় রয়েছে স্থানীয় শাহজাহান মোল্লার ছেলে জাকির মোল্লা।

স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, সজিব ও জাকির নগরীর বিএম কলেজ ও কাউনিয়া এলাকায় মাদকের পাইকার হিসেবে চিহ্নিত। তারা দু’জন কাউনিয়া এলাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণ করে। আর সজিবের ছোট ভাই সজল বরিশাল কলেজের কর্মচারী হওয়ায় কলেজের ছাত্রদের মধ্যে ইয়াবা ছড়িয়ে দেয় সে।

জানা গেছে, নিহত স্কুল ছাত্র সৌরভ হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে সজিব সন্ত্রাসীদের নিয়ে একের পর এক হুমকি দেয় সৌরভের পিতা ইউসুফ আলী ও মা শিবির আক্তারকে। সজিবের ধারাবাহিক হুমকিতে এক পর্যায় এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান তারা। অপরদিকে পশ্চিম কাউনিয়া এলাকায় রয়েছে একাধিক মেস।

যেখানে ব্যাচেলর ছাত্র/ছাত্রীরা থেকে পড়াশোনা করেন। কিন্তু সজিব-সজল-জাকিরের উৎপাতে তারা মেসে থাকতে পারেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, বিভিন্ন সময় মেসে এসে সজিব ও জাকির তাদেরকে মাদক রাখার জন্য বলে।

কিন্তু তারা রাজি না হওয়ায় তাদেরকে মারধরও করে সজিব। স্থানীয়রা জানান, পশ্চিম কাউনিয়া হাওলাদার সড়কে দোকান ভাড়া নিয়ে কসমেটিক্সের আড়ালে মাদক বিক্রি করে সজিব। অভিযোগ রয়েছে, তাদের দুই ভাইয়ের মাদক ব্যবসায় কেউ বাধা দিলে তাদের প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন সময় লাঞ্ছিত করে তারা। গত কয়েকদিন পূর্বে আইন শৃঙখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয় সজিব। পরে জামিনে এসে দোষারোপ করে স্থানীয় দুই ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করে সজিব। এতে ক্ষিপ্ত হয় স্থানীয়রা। এরই জের ধরে তাকে উত্তম মধ্যম দেয় জনতা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্বাছ খানের দুই ছেলের কারণে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাকে গণধোলাই দেয়ায় স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাদের দাবী, কোন মাদক ব্যবসায়ীকেই তারা আর এলাকায় প্রশ্রয় দিবেন না। এ ব্যাপারে তারা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ প্রশাসনের সাহায্য কামনা করেন।

উল্লেখ্য বরিশাল জিলা স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ইসতিয়াক খান সৌরভ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার ৫ দিন পর ১৬ নভেম্বর কাউনিয়া বিসিক এলাকার একটি ডোবার মধ্য থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সৌরভের পিতা ইউসুফ আলী খান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে সেই মামলায় সজিবকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, মাদকের সাথে কোন আপোষ নেই। জিরো টলারেন্স নীতিতে মাদক নির্মূলে কাজ করছে থানা পুলিশ। তিনি বলেন, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার স্যারের দিক নির্দেশনায় আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। মাদক ব্যবসায়ী যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন কোন ধরণের ছাড় দেয়া হবে না বলেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD