রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনার তালতলী উপজেলা শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা বটতলা। তালতলী সরকারি স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন এ এলাকার নামকরণের অনেক কারণের একটি হলো- এ মোড়ে প্রায় ৫০ বছর ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি বটগাছ। বিশাল গাছের ছায়ায় অসংখ্য পথচারী ও হাটে আসা মানুষ আশ্রয় নেয়।
দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে ছায়া ও আশ্রয় দেয়া সেই বটগাছটি এখন আর সুস্থ নেই। প্রতিটি অংশে বিজ্ঞাপনের পেরেকের নিষ্ঠুর আঘাতে অস্তিত্ব হারিয়ে প্রায় আধা মরা হয়ে গেছে গাছটি। আশপাশের মানুষের ভাষ্য, যে পরিমাণ পেরেক ঠোকা হয়েছে- তা তোলা হলে ২০ কেজির বেশি ওজন হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আমতলী-তালতলী মহাসড়কের পাশে ও রাখাইন পল্লীর প্রবেশ পথের এ বটগাছে পেরেক ঠুকে বিভিন্ন ক্লিনিক, ডাক্তার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রাজনৈতিক নেতার বিজ্ঞাপন লাগানো হয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যাচ্ছে পুরো উপজেলার অলি-গলি। অধিকাংশ বিজ্ঞাপনই লাগানো হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কের পাশের অসংখ্য গাছে। এতে বটগাছটির মতো সেসব গাছও রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। এরই মধ্যে মরে গেছে অনেক গাছ।
তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিমল চন্দ্র বলেন, স্কুল সংলগ্ন বটগাছটিতে সবুজ পাতার চেয়ে বিজ্ঞাপন বেশি দেখা যায়। বিজ্ঞাপনের পেরেকের কারণে গাছে বিভিন্ন অংশে পচন ধরেছে। ঐতিহ্যবাহী এ বটগাছ পেরেক মুক্ত রাখা এখন সময়ের দাবি।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, এ বটগাছকে ঘিরে অনেক কথা শুনে এসেছি। অনেক গল্প শুনে আমরা বড় হয়েছি। বটগাছটি এখন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এই গাছের মতো এত বেশি বিজ্ঞাপন অন্য কোথাও চোখে পড়বে না। পেরেকের আঘাতে অনেক গাছ এরই মধ্যে মরে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে অর্ধশত বছরের পুরোনো বটগাছটিও একদিন মরে যাবে।
স্থানীয়রা ব্যবসায়ীরা বলেন, সম্পূর্ণ গাছটির বিজ্ঞাপনের পেরেক ওঠানো হলে ২০ কেজির বেশি লোহা পাওয়া যাবে। তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো বটগাছটিকে বিজ্ঞাপন ও পেরেকমুক্ত রাখার দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে। গাছটি আবার তার সৌন্দর্য ফিরে পাবে। একই সঙ্গে উপজেলার সব অলি-গলি বিজ্ঞাপনমুক্ত করা হবে।
Leave a Reply