রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলীতে প্রায় এক কোটি ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি সড়ক মেরামত করার কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আড়পাঙ্গাশিয়া বাজার থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পর্যন্ত ৪.৩ কিলোমিটার সড়ক মেরামতকরণ কাজে এলাকাবাসী এই অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক মেরামত করছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জিওবি প্রযেক্টের অধীনে উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আড়পাঙ্গাশিয়া বাজার থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পর্যন্ত ৪.৩ কিলোমিটার সড়ক মেরামত কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। পিরোজপুরের মেসার্স ফয়সাল শিল্পী এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ওই কাজের কার্যাদেশ পায়।
ওই সড়কে পুরাতন খোয়া চাষদিয়ে রুলিং করে তার উপড়ে হালকা বালু ছিটিয়ে ৩ ইঞ্চি উচ্চতায় এক নাম্বার ইটের খোয়া (মেকাডাম) ফেলে রোলিং করার কথা। অথচ ঠিকাদার পরিমাণের চেয়ে কম ও নিম্নমানের ইটের খোয়া ফেলে রোলার দিয়ে রোলিং করে সড়কটি মেরামত করছেন। উপজেলা প্রকৌশল অফিস সঠিকভাবে কাজটি তদারকি করছেন না বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে সড়কটিতে নিম্নমানের কাজ হওয়ায় স্থানীয় ও ভূক্তভোগী ওই এলাকার সচেতন মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে শেয়ার করেন। এরপরও ঠিকাদার ও তার লোকজন নি¤œমানের খোয়া ফেলে কাজটি চলমান রাখে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আজ সোমবার সকালে সরেজমিন গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
ঘোপখালী ও আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় এলজিইডি অফিসের সহযোগিতায় সড়কটি মেরামত কাজে সিডিউলের নিয়মনীতি তোয়াক্কা করে নিম্নমানের ৩নং ইটের (চুলার মাটির রংয়ের) খোয়া দিয়ে কাজ করছেন। স্থানীয়রা এতে বাধা দিলেও ঠিকাদার ও তার লোকজন কাজ চলমান রেখেছেন।
ঠিকাদারের পক্ষে ওই কাজ তদারকি করার দায়িত্বে থাকা মো. সোহেল মিয়া জানায়, ঠিকাদার আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছেন আমি সেই ভাবেই সড়কটির মেরামত কাজ করছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফয়সাল শিল্পী (এফসি) এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সাকিল মুঠোফোনে জানান, সিডিউল অনুযায়ী সড়কটির মেরামত কাজ চলছে। দু’একটি জায়গায় নিম্নমানের খোয়া ফেলা হয়েছে। সে খোয়া সড়ক থেকে অপসারণ করা হবে।
কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, সড়কটিতে বেশ কয়েকটি জায়গায় ঠিকাদার নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারে করেছেন। আজকের মধ্যে তাদের সেই খোয়া সড়ক তুলে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে তদন্ত করে সড়কে ফেলা নিম্নমানের খোয়া অপসারণের জন্য ঠিকাদারকে পত্রের মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply