সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ অপরাহ্ন
তালতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার তালতলী উপজেলার উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ‘দুলাভাই’ নামে খ্যাত গরিবের ডা. মংফো। তিনি ১৮ বছরে ৬ লাখ ১২ হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এখনো অব্যাহত রেখেছেন তার মানবতার কাজ। একজন ভালো চিকিৎসক হিসেবে রয়েছে তার সুনাম। ২০০২ সালে চিকিৎসা জগতে পা রেখেই নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন মানবসেবায়। তালতলীতে গরিবের ডাক্তার নামে পরিচিত তিনি। কারও অসুস্থতার খবর পেলেই, দিন-রাত, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটে চলেন তালতলীর আনাচে কানাচে। সাদামাটা এ মানুষটি রোগীদের কথা শোনেন মনোযোগ সহকারে।
নিজের পাইলস অপারেশন করার পরেও বিছানায় শুয়ে শুয়ে রোগী দেখছেন তিনি। উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের নাওভাঙা গ্রামের শাহজাহান (৮০) বলেন, একদিন আষাঢ় মাসে রাইতে মুই (আমি) অসুস্থ অইয়া পরছি (হয়ে পড়ি), এই রাইতে কাদাকোদা (কাদা) ভাইঙা (ভেঙে) ডাক্তার মংফো আইছে। রাইত বিরাইতে ডাকলে মোরা মংফোরে পাই। মংফো আছে বলেই মোরা বেঁচে আছি। তালতলী সরকারি হাসপাতালের ডা. মো. মেজবাহ উল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তালতলী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মংফো একজন ভালো চিকিৎসক, ভালো মনের মানুষ। দীর্ঘ ৯ বছর তিনি তালতলী উপজেলায় একাই চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তার চিকিৎসা সেবার বয়স ১৮ বছর হলো। এখনো ছুটে চলেন মানবসেবায়, তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। চিকিৎসকরা নিজের কথা চিন্তা করতে পারে না, তারা মানুষের কথা চিন্তা করে, মানবসেবার কথা চিন্তা করে। তালতলী বাসী খুব ভাগ্যবান তার মতো একজন চিকিৎসক পেয়ে। ডা. মংফো বলেন, মানবসেবাই আমার মূল ব্রত। যতদিন বেঁচে আছি মানুষের সেবা করে যাব। গরিব ও অসহায় মানুষের চিকিৎসা দিতে না পারলে আমি মানসিকভাবে সুস্থ থাকি না। মানুষের সেবা করেই আমি আত্মতৃপ্তি পাই। মানবসেবা যেন আমার জীবনের একটি বড় অংশে পরিণত হয়েছে। আমার কাছে যখন গভীর রাতে মানুষ আসে আমি চিন্তা করি আমার কোনো স্বজন অসুস্থ হলে আমি কি বসে থাকতাম? এই চিন্তা করেই ২৪ ঘণ্টা মানবসেবায় রয়েছি। আমি মানুষের মধ্যে সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজে পাই। তাই যতদিন বেঁচে আছি, আমি মানুষের সেবা করে যাব। ১৮ বছরে ৬ লাখ ১২ হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন বলেও জানান ডা. মংফো।
Leave a Reply