হারিয়ে গেছে বাংলার ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ ‘হুক্কা’ Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে বিশ্বাসী: বরিশালে ইসি হাবিব হিজলায় যৌথ অভিযানে আটক ১০ জেলে, জরিমানা গৃহবধূর স্যালোয়ারের মধ্যে ইয়াবা, অতঃপর … বরিশালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্য কোন দ্বন্দ্ব নেই: চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির মোবাইল ইন্টারনেট গতি সূচকে বাংলাদেশের আরও অবনতি ৫২৭টি ভারতীয় খাদ্যপণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানের অস্তিত্ব মিলেছে: ইইউ মাদক মামলার বাদী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ, আসামী খালাস কাউখালীতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা বৃষ্টির জন্য বরিশালে ইসতিসকার নামাজ আদায় সদর উপজেলার শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চাই : এসএম জাকির




হারিয়ে গেছে বাংলার ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ ‘হুক্কা’

হারিয়ে গেছে বাংলার ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ ‘হুক্কা’




ডেস্ক রিপোর্ট : কালে কালে বদলায় সমাজ, সংস্কৃতি, হারায় ঐতিহ্য। তেমনি কালের আবর্তেই আশাশুনি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ ‘হুক্কা’। আবহমান কাল থেকেই গ্রামবাংলার মানুষের ধূমপানের অন্যতম মাধ্যম ছিল হুক্কা। ধূমপানের জনপ্রিয় এই মাধ্যম গ্রামবাংলার বিনোদন, আতিথেয়তা, বন্ধুত্ব, সম্প্রীতির প্রতীক। সে সময় ধনী-গরিব প্রতিটি বাড়িতেই ছিল হুক্কার প্রচলন।

আজ থেকে এক দুই দশক আগেও গ্রামগঞ্জে ধূমপায়ীরা হুক্কার মাধ্যমে নেশায় অভ্যস্ত ছিল। পুরুষের পাশাপাশি বয়স্ক নারী এবং ছেলেমেয়েরাও হুক্কার মাধ্যমে ধূমপান করত। অনেকে শখের বশেও হুক্কায় দিত আয়েশি টান। এ ছাড়া নাটক, সিনেমায় অভিনয়ে ধনীদের আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে পিতলের তৈরি ‘হুক্কা’ ও গরিবদের জন্য নারিকেলের খোল দ্বারা তৈরি ‘ডাবা’ ব্যবহার করা হতো। যা মানুষের জীবনের উঁচু-নিচু পার্থক্য নির্ণয় করত।

জানা যায়, সম্রাট আকবর (মুঘল আমলে) ১ম তামাক চাষের হুকুম দিয়েছিলেন।আর এক তথ্যে জানা যায় পুর্তগীজরা ব্যবসার উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আসার সময় তাদের প্রিয় শখের নেশার পাত্র হুক্কা সাথে নিয়ে আসতেন।হুকা পানের টিকিয়া বা টিক্কা বানানো হ’ত গুরা কয়লা দিয়ে আর তামাকপাতা মিহি গুরার সাথে চিতা গুর মিশিয়ে লাড্ডু বানিয়ে কল্কিতে রেখে আগুন জ্বালিয়ে হুকা পান করা হ’তো।মুঘল আমলে বিদরী কাজের হুকার প্রচলন ছিল।

বৃটিশ আমলে পিতল তামা দস্তার হুকার প্রচলন শুরু হয়।বড় নল ওয়ালা পিতলের হুকা কে ফুরশি হুকা বলা হ’ত।রাজা জমিদার ধর্নাঢ্য ব্যক্তিগন কারুকার্য খচিত রৌপ্য জার্মান সিলভার দস্তা তামা পিতলের হুক্কা ব্যাবহার করতেন।কালক্রমে এদেশীয় সাধারন মানুষজন নারিকেলি ও মাটির হুক্কা ব্যাবহার করেছে।ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী এখনো বাঁশের তৈরী হুকা পান করে থাকেন।

এক সময় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক হিসেবে ‘হুক্কা’ খুবই জনপ্রিয় ছিল। এখন সবই অতীত। আশাশুনি এলাকার কয়েক প্রবীণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামের বিভিন্ন বৈঠকখানায় মেহমানদের জন্য প্রধান আকর্ষণ ছিল হুক্কা। যে কোন বয়সের ছেলে ও বয়স্করা হুক্কার নেশায় মাতোয়ারা ছিল। তামাক পাতাগুলোকে টুকরো টুকরো করে কেটে এতে চিটাগুড় মিশ্রিত করে তৈরি হত হুক্কার প্রধান উপাদান ‘তামুক’।

তামুক মাটির তৈরি কলকি’র মধ্যে দিয়ে কয়লার ‘টিক্কা’র মাধ্যমে আগুন দিয়ে ধূমপান করা হতো। এটা একপ্রকার নেশার মতো। হুক্কায় ধূমপানের জন্য এক সময় হাটবাজারে তামাকের গুড়ি মিশ্রিত করে বিক্রি করতে দেখা যেত, বিক্রি করা হতো নারিকেলের খোল দ্বারা হাতে তৈরি হুক্কা। যা ‘ডাবা’ নামে পরিচিত ছিল। হুক্কা নিয়ে গ্রামবাংলায় একটি জনপ্রিয় লোকগান প্রচলিত ছিল।

কালের পরিক্রমায় আশাশুনি উপজেলার গ্রামে গ্রামে হুক্কায় তামাকপানের যে প্রচলন ছিল তা আর দেখা যায় না। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই হুক্কায় ধূমপান করা দূরে থাক চোখেই দেখেনি হুক্কা। হুক্কার জায়গা দখল করে নিয়েছে বিড়ি, সিগারেট, গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। যার মধ্যে রয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর নিকোটিন। তার পরেও এই মরণ নেশায় জড়িয়ে পড়েছে যুব সমাজ। যাদের নিয়ে দেশের সব অভিভাবক মহল থাকেন সব সময় উদ্বিগ্ন।

এক কালের গ্রাম বাংলার অতি প্রয়োজনীয় উপাদান ‘হুক্কা’ আজ বিলুপ্তির পথে। ঘরের বারান্দায় বা দেউড়ি নয় হুক্কার স্থান এখন মিউজিয়ামে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD