সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলায় এক মিষ্টির দোকানের কর্মচারীকে ৮ দিন ধরে রুমের মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে দোকনের মালিক মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
নিহত কর্মচারীর নাম দুলাল মালী (৫০)। সে বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বাহের চর গ্রামের ঝন্টু মালীর ছেলে।নিহতের স্ত্রী অঞ্জু রানী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভোলার বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছে।
সে কারণে আমরা গত ১২ বছর ধরে ভোলা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কালিখোলা এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকি। সর্বশেষে সে (দুলাল মালী) ভোলার ঘুইংগার হাট বাজারের আল মদিনা মিষ্টির দোকানের কাজ করতো।
দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেন তাকে গালমন্দ করার কারণে চলতি মাসের প্রথম দিকে ওই দোকানের চাকরি ছেড়ে ভোলার খেয়াঘাট এলাকার আরেকটি মিষ্টির দোকানে কাজ নেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আল মদিনা মিষ্টির দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেনের গত ৯ আগস্ট আমার স্বামীকে খেয়াঘাট থেকে ধরে নিয়ে তার আবাসিক হোটেলের একটি ঘরে হাত পা বেঁধে আটক করে রাখে।
এদিকে আমরা অনেক দিন তাকে খোঁজাখুঁজি করে কোন খবর পায়নি। পরে ১৬ আগস্ট রাতে দোকানের এক কর্মচারীর সহযোগিতায় তার মোবাইল থেকে আমাকে ফোন করে তাকে আটকে রাখা ও নির্যাতনের খবর দেয়। ওই রাতেই আমি দৌলতখান থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসি।
এসময় তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন ছিল। এবং সে খুব অসুস্থ ছিল। টাকার অভাবে তাকে আমি হাসপাতালে ভর্তি করতে পারেনি। তাই বিনা চিকিৎসায় আমার স্বামী সোমবার মারা যায়।
তিনি আরো জানান, তার স্বামী তাকে মৃত্যুর আগে নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমি কামালের দোকানের চাকরি কেন ছেড়ে দিয়েছি। প্রতিদিনই কামাল ও তার ছোট ভাই রড এবং লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করতো। তিনি ওই নির্যাতনকারী কামাল হোসেনের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে দোকানের মালিক মো. কামাল হোসেন পলাতক থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার দোকানের কর্মচারী মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে দুলালকে আটকে রেখে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি শুনেছি তার কাছ থেকে দোকান মালিক ১৮ হাজার টাকা পায়। সে জন্য মনে হয় তাকে আটক করে রেখেছে। তবে আমি সঠিক জানি না।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন জানান, আমরা গত কয়েকদিন আগে ওই দোকান কর্মচারীকে উদ্ধার করেছি। তখন সে অসুস্থ ছিল। পরে মারা যাবার পর নিহতের লাশ ভোলা সদর হাসপতালে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আমরা আসামিকে আটকের চেষ্টা করছি।
Leave a Reply