রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে সাঁজানো ধর্ষণ মামলায় নিজেই ধর্ষক হয়ে কারাগারে ছগির (৩৮) নামের এক আইনজীবী সহকারী (মহরার)। শুক্রবার সকালে ছগিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে হাজির করলে ওই দিনই আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বরগুনা সদর থানা সুত্রে জানা গেছে, বরগুনার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের গুদিঘাটা গ্রামের আকলিমা (৪০) নামের এক নারী ২৫ মার্চ বৃহস্পতিবার বরগুনা সদর হাসপাতালের জাহিদ নামের এক কর্মচারির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন বরগুনা সদর থানায়। এরপর বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই কেয়াসহ পুলিশের একটি টিম ওই নারীকে নিয়ে কথিত ধর্ষকের কর্মস্থলে গিয়ে ধর্ষককে চিহ্নিত করতে বললে ঔ নারী ধর্ষককে শনাক্ত করতে ব্যর্থ। হন।
এঘটনায় পুলিশের সন্দেহ হলে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই নারী বলেন, মামলা সুত্রে ছগির নামের এক মহরার সাথে তার পরিচয় হয়। ছগির নিজেই তাকে ধর্ষণ করে ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বলে। এরপর বরগুনার সরকারি হাসপাতালের জাহিদ নামের এক কর্মচারিকে ফাঁসাতে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ করতে থানায় পাঠায় ছগির। সে কখনো জাহিদকে চিনেন না বা কখনো দেখেননি বলেও স্বীকার করে।
এবিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে কর্মরত জাহিদ বলেন, আমার সাথে তাদের কোন পারিবারিক শত্রুতা নেই। তবে তার শ্যালিকার সাথে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্বামী জহিরুল ইসলাম বাবুর সাথে সম্প্রতি ডিভোর্স হয়ে গেলে তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। জাহিদ দাবী করেন, জহিরুল ইসলাম বাবুর ইন্ধনেই মহরা ছগির তাকে ফাঁসাতে এই মামলা দিতে চেয়েছিলো। তিনি এঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশি তদন্তে মিথ্যে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ওই নারী তার ভূল বুঝতে পেরে সত্যতা স্বীকার করেছে। নারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা প্রাথমিকভাবে মহরা ছগিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমান পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে কাউকে ফাঁসানোর কোন সুযোগ নেই। বরগুনা সদর থানার পুলিশ সকল অভিযোগ শতভাগ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকেন। পুলিশ ওই নারীর মুখের বয়ান অনুযায়ী আইনজীবী সহকারীকে (মহরার) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। সেই সাথে ঔ নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply