শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২২ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি :
চরফ্যাশনের অদুরের জনপদ জাহানপুর ইউনিয়ন। বি.এন.পির ক্ষমতা হারানোর পর সেখানে চলছে, খুন, গুম, এসিড সন্ত্রাস, নারী নিপীড়ন, দখল আর জুলুমবাজীর মত নারকীয় তান্ডবলীলা। ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধি, ছিচকে মাস্তান, পাতি নেতা এমন কেউ নেই যারা অপকর্মের সাথে জড়িত নয়। তাদের খপ্পরে আর হয়রানীর শিকার ওই এলাকার আটকপাট নামক বাজারের নিরীহ বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন মহাজনের পুত্র কামাল হোসেন। সম্প্রতি স্থানীয় এ ব্যবসায়ীর দীর্ঘ ৬০ বছরের দখলীয় বাজার মুখের চারটি দোকান ভিটি দখল করে নিল এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর ফরাজী ও পার্শ্ববর্তী রসূলপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহির পন্ডিত।
দোকান ভিটির মালিক কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের উপ-মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই দুই ব্যাক্তি তার চারটি দোকানের ভিটি দখল করেছে। সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানকালে এলাকার জাহানপুর বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন মাঝি জানান, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে কামাল গংরা উক্ত দোকান ভিটিতে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু এখন তা সেখানকার সাবেক ও বর্তমান দুই চেয়ারম্যান দখল করে নিজেদের সম্পদ হিসেবে করে নিয়েছেন। জাহানপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড সাবেক ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন জানান, দোকানগুলোর প্রকৃত মালিক কামাল হোসেন মিয়া ।
অন্যরা কীভাবে সেগুলো দখল করে নিলো তা আমার বোধগম্য নয়। বাজারের অপর ব্যাবসায়ী নেতা আলম জমাদ্দারসহ স্থানীয় শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্যাবসায়ী কামালের বাপ-দাদার দখলীয় দোকান ভিটা গুলো ক্ষমতাসীন দলের দুই জনপ্রতিনিধির দখলে। এ ব্যপারে রসূলপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহির পন্ডিতের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কামাল হোসেনের ভিটা তিনি দখল করেন নি বরং কামালের স্ত্রীকে ভিটাগুলো রক্ষা করতে সহযোগীতা করেছেন। কোন রকম দখল সন্ত্রাসের সাথে তার সম্পৃক্ততা নেই বলে তিনি দাবী করেন। অভিযুক্ত জাহানপুর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান আলি আকবর ফরাজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কামাল হোসেনের কোন ভিটা দখল করিনি। অন্য মালিকের দুটি ভিটা আমি ক্রয় করেছি। এদিকে দুই জনপ্রতিনিধির দখল সন্ত্রাস থেকে রক্ষা পেতে দোকান মালিক কামাল হোসেন স্থানীয় সাংসদ উপ-মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এর কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি দলের অপর নেতা জিন্নাহগড় ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন মিয়ার কাছে বিষয়টি মিমাংসার জন্য লিখিত নির্দেশ দেন।
কিন্তু সেটি নিয়েও ক্ষমাতাসীন দলের ওই চেয়ারম্যানের তদন্ত নাটক জাহানপুর বাজারের ব্যবসায়ী কামাল হোসেনকে হতাশ করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, দুই চেয়ারম্যানের দখল সন্ত্রাসের তদন্তভার একই দলের আরেক চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়ার অর্থ হলো শেয়ালের কাছে মুরগী পাহাড়ায় রাখার মত। এর পূর্বে উপ-মন্ত্রীর কাছে আবেদন করলে মন্ত্রী দলের আরেক নেতা জামাল মহাজনকে বিষয়টির সুরাহার দায়িত্ব দিলে সেটি নিয়েও শেয়াল-মুরগির পাহারার নাটক হয়েছিল। এ ঘটনাটি জাহানপুর ইউনিয়নের আটকপাট এলাকায় টক অব দ্যা ভিলেজে পরিনত হয়েছে।
Leave a Reply